শেখ মুজিবকে জাতির পিতা উপাধি কে দিয়েছে, প্রশ্ন উপদেষ্টা নাহিদের
বিআলো প্রতিবেদক: বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা উপাধি কে দিয়েছে প্রশ্ন রেখে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান অবশ্যই জাতির জনক না। এই ভূখণ্ডে অনেকেরই ভূমিকা রয়েছে, লড়াই রয়েছে। ইতিহাসের বহুমুখীতা রয়েছে। আওয়ামী লীগ মাওলানা ভাসানীর অবদানকে অস্বীকার করেছে। তাই এখন সময় এসেছে সবার ভূমিকা স্মরণ করার।
আটটি জাতীয় দিবস বাতিলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে নাহিদ বলেন, জাতীয় দিবস বলতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ তাদের নিজেদের বিভিন্ন দিবস চাপিয়ে দিয়েছে। তাই সেগুলো থাকছে না।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।
জাতীয় দিবসের তালিকা থেকে ৭ মার্চকে বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “৭ মার্চ গুরুত্বপূর্ণ, তবে জাতীয় দিবস হওয়ার মতো না। আওয়ামী লীগ অনেক দিবসকে নষ্ট করে ফেলেছে। তারা তো শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি তৈরি করে পূজাও করেছিল।
জাতীয় দিবসের তালিকায় নতুন দিবস যুক্ত হবে বলেও জানান নাহিদ ইসলাম। তিনি জানান, জুলাই গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত দিবস আসবে। এ নিয়ে আলোচনা চলছে।
৭ মার্চ নিশ্চিহ্ন করা হচ্ছে না জানিয়ে নাহিদ বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান অবশ্যই জাতির জনক না। এই ভূখণ্ডে অনেকেরই ভূমিকা রয়েছে, লড়াই রয়েছে। আমাদের ইতিহাসে শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী, আবুল হাসেম, যোগেন মণ্ডল, মওলানা ভাসানী এমন অনেক মানুষের লড়াই আছে। আমরা তো মনে করি এখানে একজন জাতির পিতা না, বরং অনেক ফাউন্ডিং ফাদার’স (জাতির পিতা) রয়েছে। যাদের অবদানের ফলে আমরা এই স্বাধীন ভূখণ্ড, স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। সুতরাং, জাতির পিতা হিসেবে আমরা একটা দলের বা একজন ব্যক্তিকে সীমাবদ্ধ করতে চাই না।
এ উপদেষ্টা আরও বলেন, এতগুলো জাতীয় দিবস পালনের দরকার নাই। যেগুলো তাৎপর্যপূর্ণ সেগুলো রেখে বাকিগুলো বাতিল করা হবে। এছাড়া, জুলাই ও আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে নতুন দিবসও যুক্ত হতে পারে। যেহেতু নতুন অভ্যুত্থান।
এর আগে একই দিন সকালে প্রধান উপদেষ্টার ভ্যারিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে জানানো হয়, ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক, চার নভেম্বর সংবিধানসহ আটটি দিবস বাতিল করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।
ওই পোস্টে বলা হয়, ‘উপদেষ্টা পরিষদ সম্প্রতি এক বৈঠকে আটটি দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। শিগগিরই এসব দিবস বাতিল করে পরিপত্র জারি করবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।’
পোস্টে বলা হয়, বাতিল হতে যাওয়া জাতীয় আট দিবসগুলো হলো-
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ
১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী
৮ আগস্ট শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস
১৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল দিবস
৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস
১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবরে ইউনেস্কো ৭ই মার্চের ভাষণকে ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ (বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য) হিসেবেস্বীকৃতিদেয়।
বিআলো/শিলি