সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া তথ্যের প্রতিবাদে যা জানালেন ফখরুল
বিআলো প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্নোত্তর পর্বে তারেক রহমানসহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ১৫ জন সাজাপ্রাপ্ত আসামি, পলাতক থাকার যে তথ্য সংসদে তুলে ধরেছেন সেটির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২১ আগস্টের বোমা হামলা মামলায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তারেক রহমানসহ বিএনপির কয়েকজন নেতৃবৃন্দকে যুক্ত করা হয়েছে। তার ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করার এটি একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।
তিনি বলেন, জাতীয়তাবাদী নেতৃত্বকে দুর্বল এবং গণতন্ত্রকে বিপন্ন করতে বর্তমান আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর, তারেক রহমানের নাম চার্জশিটে ঢোকানো হয়। নিজেদের মতাদর্শের অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তাকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে; আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে, তাদেরই আন্দোলনের ফসল ১/১১ এর সরকারের সময়সহ দুই দফা তদন্ত ও চার্জশিটে তারেক রহমানের নাম না থাকার পরেও, তাকে জড়িত করা সম্পূর্ণরুপে ডামি আওয়ামী সরকারের চরম আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ। বিপর্যস্ত রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও নাগরিক স্বাধীনতাকে বর্তমান দশায় উপনীত করার জন্যই, তারেক রহমানের নামে অসংখ্য মিথ্যা মামলায় বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করে সাজা দেয়া হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী চক্র দীর্ঘদিন ধরে সুপরিকল্পিতভাবে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। আর সেজন্যই চক্রান্তমূলকভাবে ২১ আগস্টের মামলায় জড়িত করা হয়েছে তাকে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে আইনের শাসনের অনুপস্থিতিতে সত্য ও সম্মানের জন্য, আত্মমর্যাদার জন্য সুশীল ভদ্রলোকদের সমাজে টিকে থাকাকে অসম্ভব করে তোলা হয়েছে। স্বার্থান্ধতা, ঔদ্ধত্য ও মহাদুর্নীতিকে পর্দার আড়ালে রেখে, সরকার এখন তারেক রহমানকে নিয়ে বিষোদগার করছেন। চারিদিক থেকে ব্যর্থ আওয়ামী সরকার রাজনৈতিক বিরোধের ছায়াকে, প্রলম্বিত রাখতে চান অশুভ উদ্দেশ্যে। সুশাসন ও ন্যায়বিচার থাকলে লুটেরা, টাকা পাচারকারী এবং ক্ষমতাঘনিষ্ঠ ঋণখেলাপীদের আইনের আওতায় শাস্তি হতো। অথচ তারাই আজ দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ডামি সরকার জনপীড়ক ও অত্যাচারী বিচার শূন্যপ্রশাসন ও আইন বিভাগ দিযে গণতন্ত্রকামী নেতাকর্মীদের নিষ্ঠুরভাবে দমন করছে। যখন সরকারের ঘনিষ্ঠজনদের কলঙ্কিত দুর্নীতি প্রকাশ পাচ্ছে এবং দুর্নীতির মহামারীতে ক্ষমতার সাথে সংশ্লিষ্ট বড় বড় কর্মকর্তাদের অভিনব দুর্নীতির সংবাদ ভাইরাল হচ্ছে, তখন তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারের হুমকি গভীর চক্রান্তের অংশ।
জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতীক ও চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রধান নেতা তারেক রহমানকে গ্রেফতারের হুমকি গণতন্ত্রকামী জনগণের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা বলে আমি মনে করি। আমি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে গ্রেফতারের হুমকির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আজ গণমাধ্যমে পাঠানো বিএনপির সহ দফতর সম্পাদক মুহম্মদ মুনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বুধবার (১২ জুন) প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ১৫ সাজাপ্রাপ্ত আসামি পলাতক রয়েছে। ৪৯ জনের মধ্যে ৩৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়াসহ ১৫ জন পলাতক। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জাতীয় সংসদে তার জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিনের (মহিলা আসন-৩৫) এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর পর্বটি টেবিলে উত্থাপিত হয়।
বিআলো/শিলি