• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ
    • যোগাযোগ
    • অভিযোগ
    • ই-পেপার

    সময়ের বিবর্তন আর পরিবেশ বিপর্যয়ে হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই পাখির বাসা 

     dailybangla 
    07th Nov 2024 5:54 am  |  অনলাইন সংস্করণ

    লালমনিরহাট প্রতিনিধি: আগে লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায় তাল গাছ ও খেজুর গাছে বাবুই পাখি বেশ দেখা যেত। সময়ের বিবর্তন আর পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে শিল্পী, স্থপতি ও সামাজিক বন্ধনের কারিগর বাবুই পাখির বাসা। তালগাছের কচিপাতা, খড়, ঝাউ ও কাশবনের লতাপাতা দিয়ে উঁচু তালগাছে নিপুণ দক্ষতায় বাসা তৈরি করত বাবুই পাখি। সেই বাসা দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি মজবুত। প্রবল ঝড়েও তাদের বাসা ভেঙে পড়ে না। শক্ত বুননের এ বাসা টেনেও ছেঁড়া যায় না। সবচেয়ে বড় আশ্চর্যের বিষয় হলো, ভারসাম্য রক্ষার জন্য বাসার ভেতরে থাকে কাদার প্রলেপ।

    লালমনিরহাট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিলুপ্ত প্রায় বাবুই পাখি ও পাখির বাসা দেখতে চাইলে বেশি বেশি তাল ও খেজুর গাছ লাগাতে হবে। পাখি বিশেষজ্ঞরা জানান, বাসা তৈরির পর সঙ্গী খুঁজতে যায় অন্য বাসায়। সঙ্গী পছন্দ হলে স্ত্রী বাবুইকে সাথী বানানোর জন্য অনেক কিছু করে। পুরুষ বাবুই নিজেকে আকর্ষণীয় করতে খাল-বিল ও ডোবায় ফুর্তি করে, নেচে বেড়ায় গাছের ডালে ডালে। বাসা তৈরির কাজ অর্ধেক হলে কাঙ্ক্ষিত স্ত্রী বাবুইকে সেই বাসা দেখায়। বাসা পছন্দ হলেই কেবল সম্পর্ক তৈরি হয়। স্ত্রী বাবুই বাসা পছন্দ করলে বাকি কাজ শেষ করতে পুরুষ বাবুইয়ের চার দিন সময় লাগে। স্ত্রী বাবুই পাখির প্রেরণা পেয়ে পুরুষ বাবুইটি মনের আনন্দে শিল্পসম্মত ও নিপুণভাবে বিরামহীন কাজ করে বাসা তৈরি করে। বাসার ভিতরে ঠিক মাঝখানে একটি আড়া তৈরি করে তারা, যেখানে পাশাপাশি দুটি পাখি বসে প্রেমালাপসহ নানা গল্প করে। তার পর ঘুমাতে যায় আড়াতেই। কী অপূর্ব বিজ্ঞানসম্মত শিল্প চেতনাবোধ তাদের মধ্যে। একটা সময় ছিল, একটি তালগাছে ঝুলে থাকত অসংখ্য বাসা। সে দৃশ্য বড়ই নান্দনিক এবং চিত্তাকর্ষক, যা চোখে না দেখলে সে দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য কাউকে বোঝানো সম্ভব নয়। এসব শিল্পকর্মের ছবি ব্যবহার করে অনেক ক্যালেন্ডার হতো।

    অফুরন্ত যৌবনের অধিকারী প্রেমিক বাবুইয়ের যত প্রেমই থাক, প্রেমিকা ডিম দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রেমিক বাবুই খুঁজতে থাকে আরেক প্রেমিকা। পুরুষ বাবুই এক মৌসুমে ছয়টি বাসা তৈরি করতে পারে। ধান ঘরে ওঠার মৌসুম হলো বাবুই পাখির প্রজনন সময়। দুধ ধান সংগ্রহ করে স্ত্রী বাবুই বাচ্চাদের খাওয়ায়। এরা তালগাছেই বাসা বাঁধে বেশি। মাঝে মাঝে খেজুর গাছ ও আখ খেতেও বাবুইর বাসা চোখে পড়ে। তালগাছ উজাড় হয়ে যাওয়ার কারণে এসব বাবুই পাখি এখন বাধ্য হয়ে অন্য গাছে বাসা বাঁধছে। একসময় লালম-ি নরহাটের প্রতিটি উপজেলার প্রায় সবখানেই দেখা যেত শত শত বাবুই পাখির বাসা ঝুলছে তালগাছের পাতায় পাতায়। গত শতাব্দীর আশির দশকে ফসলে কীটনাশক ব্যবহার করার ফলে কীটনাশকযুক্ত ফসল আর মৃত পোকামাকড় খেয়ে বাবুই পাখির বিলুপ্তির প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে গ্রামাঞ্চল থেকে হারিয়ে যেতে বসছে প্রকৃতির এক অপরূপ শিল্পের কারিগর বাবুই পাখি। প্রকৃতির বয়ন- শিল্পী, স্থপতি এবং সামাজিক বন্ধনের কারিগর নামে সমধিক পরিচিত বাবুই পাখি ও তার বাসা এখন আর চোখে পড়ে না। ঝাঁকে ঝাঁকে সুদূর সাইবেরিয়া থেকে উড়ে আসা এসব বাবুই পাখির বিলুপ্তির প্রধান কারণ ফসলে অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ।

    খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক অসাধু শ্রেণির মানুষ অর্থের লোভে বাবুই পাখির বাসা সংগ্রহ করে শহরে ধনীদের কাছে বিক্রি করছে। গাছে গাছে এসব বাসা এখন আর দৃশ্যমান না হলেও শোভা পাচ্ছে শহরে ধনীদের ড্রয়িং রুমে।

    বিআলো/তুরাগ

    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    December 2024
    M T W T F S S
     1
    2345678
    9101112131415
    16171819202122
    23242526272829
    3031