সাংবাদিকের রক্তাক্ত দেহ, নীরব পুলিশ: কসাই পারভেজের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর উত্তরখানে পাওনা টাকা চাওয়ায় এক সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়েছে কসাই পারভেজের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা। ভুক্তভোগী সাংবাদিক ‘আজকের পত্রিকা’র নুরুল আমিন হাসান জানান, হামলার বিষয়ে থানায় একাধিকবার অভিযোগ জানালেও পুলিশ রহস্যজনকভাবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
জানা গেছে, শুক্রবার (৪ জুলাই) ভোররাতে উত্তরখান থানাধীন মাজার এলাকার ‘পারভেজ গোশত বিতান’ নামক দোকানের সামনে সাংবাদিক হাসানের ওপর হামলা চালানো হয়। প্রাণে বাঁচতে তিনি পাশের একটি খাবার দোকানে আশ্রয় নিলেও সন্ত্রাসীরা সেটিও ঘেরাও করে।
পরবর্তীতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ ও র্যাব-১ এর একটি টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাংবাদিক হাসানকে উদ্ধার করে। এসময় পারভেজের ছোট ভাই জাহিদকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হলেও পরে অজ্ঞাত কারণে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক হাসান জানান, কসাই পারভেজের কাছে আমি ব্যবসায়িক লেনদেন বাবদ টাকা পেতাম। ২০২২ সালের কুরবানির ঈদের আগে পারভেজ আমার কাছ থেকে ধার নিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকা নেয়। এক পর্যায়ে সে পার্টনারশিপের কথা বলে টাকা ফেরতের বিষয়টি এড়িয়ে যেতে থাকে। একাধিকবার টাকার হিসাব চাইলেও সে তালবাহানা করতে থাকে।
তিনি আরও জানান, সর্বশেষ গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে টাকার জন্য গেলে পারভেজ ও তার ভাই জাহিদ আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এরপর থানায় লিখিত অভিযোগ দিই। পুলিশের মধ্যস্থতায় কয়েক দফা সময় নির্ধারণ হলেও পারভেজ টাকা দেয়নি। এমনকি দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যায়।
গত শুক্রবার রাতে দোকান খোলার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে পারভেজের ভাই জাহিদ ও তার ভাড়াটে রকি, জানুসহ অজ্ঞাত আরও ৩–৪ জন দেশীয় অস্ত্রসহ তার ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন সাংবাদিক হাসান। হামলাকারীরা তার গলার চেইন, মানিব্যাগ ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাগজ ছিনিয়ে নেয়।
এ বিষয়ে উত্তরখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) টি এম আল আমিন বলেন, সিনিয়র স্যারের নির্দেশে জাহিদকে থানায় আনা সম্ভব হয়নি। আমাদের বলা হয়েছে—প্রথমে হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে মামলা হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সাংবাদিক হাসান থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও এখনো মামলা গ্রহণ বা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তিনি প্রশাসনের প্রতি দ্রুত বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বিআলো/এফএইচএস