সিন্ডিকেট ভেঙে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার উন্মুক্তের দাবিতে বায়রার মানববন্ধন
নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের আমলে মালয়েশিয়ার শ্রমবারজারকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট ভেঙে নতুন করে শ্রমবাজার উন্মুক্তের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকরা। একইসঙ্গে সিন্ডিকেট হোতাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান তারা।
সোমবার সকাল ১১ টায় প্রবাসী কল্যাণ ভবনের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) উদ্যোগে সংগঠনের সাধারণ সদস্যরা এই মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধনে বায়রার সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি রিয়াজ উল ইসলাম বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের সময় মালয়েশিয়া শ্রমবাজার সিন্ডিকেট করে হাজার কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। এই সিন্ডিকেটের অপতৎপরতা এখনও চলছে। এই সিন্ডিকেট রুখে দিতে বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া সমঝোতা চুক্তিতে পরিবর্তন এনে পুনরায় শ্রমবাজার উন্মুক্ত করতে হবে। এছাড়া সিন্ডিকেট হোতাদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে তাদের বিচার কার্যকর করতে হবে।
বক্তারা জানান, সাবেক সরকারের সময় তৎকালীন মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালী নেতাদের প্রশ্রয়ে পলাতক রুহুল আমিন স্বপনের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট গড়ে ওঠে। বর্তমানে বিদেশে বসেই তারা সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
তারা জানান, এই সিন্ডিকেটে মূল হোতাদের মধ্যে আছেন সাবেক সরকারের উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, দাতশ্রী আমিন নুর, সাবেক অর্থ মন্ত্রী লোটাস কামাল, সাবেক এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারি, সাবেক এমপি লে. জেনারেল মাসুদ, সাবেক এমপি বেনজির আহমেদ, ঢাকা উত্তর যুবলীগ সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার, সাবেক প্রধানমন্ত্রর পিএস আলাউদ্দিন চৌধুরী নাসিম, ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি মহিউদ্দিন মহি ও বায়রার সাবেক ইসি সদস্য কাজী মফিজুর রহমান।
এই সিন্ডিকেটের দুর্নীতি উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, ৮ লাখ কর্মীর কাছ থেকে টিকিট ভিসাসহ অতিরিক্ত ১২ হাজার কোটি টাকা আদায় করেছে চক্রটি। এর ভাগ তৎকালীন মন্ত্রী, এমপি ও প্রভাবশালী নেতাদের দেওয়া হয়েছে। ২৫ লাখ যাত্রীর কাছ থেকে মেডিক্যাল স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাবদ আদায় করেছে ৭৫০ কোটি টাকা। সিন্ডিকেটের লাইসেন্স পেতে এজেন্সিপ্রতি দিতে হয়েছে ন্যূনতম ৫ কোটি টাকা।
নিউএজ ইন্টারন্যাশোনাল এর প্রধান হিসাব রক্ষক শওকত আলম টিটু বলেন, মালয়েশিয়ায় এখন ১২ লাখ শ্রমিকের চাহিদা আছে। ১৪ টি দেশ থেকে তারা শ্রমিক নিয়ে থাকে। অন্যান্য দেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া কার্যক্রম শুরু হলেও নানা জটিলতায় এখনো বাংলাদেশ থেকে আমরা শ্রমিক পাঠাতে পারছি না। এতে এজেন্সি মালিকরা যেমন ব্যবসা হারাচ্ছে, তেমনি দেশ হারাচ্ছে রেমিট্যান্স।
অন্যদিকে বিদেশে যেতে ইচ্ছুক বড় একটি জনগোষ্ঠী বেকারত্বে ভুগছেন। আমরা চাই সব শ্রমবাজার উন্মুক্ত করতে বর্তমান সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।
বিআলো/শিলি