হল ক্যান্টিনের খাবারে পোকা: প্রতিবাদ করায় ছাত্রীকে হেনস্তা ইসলামী ছাত্রীসংস্থা নেত্রীর
আবুবকর সম্পদ, জবি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের ক্যান্টিনের খাবারে পোকা পাওয়া নিয়ে প্রতিবাদ করায় এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে ইসলামী ছাত্রীসংস্থার নেত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেমাতুজ জোহরা ইমুর বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (৩ নভেম্বর) রাতে। সেদিন হলের ক্যান্টিনের বরবটি-আলুর ভাজিতে পোকা পেলে সমাজকর্ম বিভাগের ১৬তম আবর্তনের শিক্ষার্থী উম্মে মাবুদা বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন। পোস্টটি ছড়িয়ে পড়লে এবং অনেক শিক্ষার্থী সহমত জানালে ইমু তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হন। উম্মে মাবুদা জানান, খাবারে পোকা পাওয়ার বিষয়টি নতুন নয়। জুনিয়র এক শিক্ষার্থী তাঁকে বিষয়টি জানানোর পর প্রমাণসহ তিনি পোস্টটি দেন। এরপর থেকেই ইমু তাঁকে হুমকি দিতে শুরু করেন।
তিনি বলেন, “প্রভোস্ট ম্যাডাম আমাকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে বলেছেন। কিন্তু ইন্টার্নশিপে থাকার কারণে আমি নির্ধারিত সময়ে দেখা করতে পারিনি। পরে ইমু নিজেই আমার রুমে এসে চাপ সৃষ্টি করেন এবং ক্ষমা চেয়ে নতুন করে পোস্ট দিতে বলেন।”
মাবুদার অভিযোগ, ইমু তাঁকে বলেন—“এমন পোস্ট করলি কেন? এখনই গিয়ে পোস্ট দিয়ে ক্ষমা চাই। তুই ভোটের আগে বাজে পোস্ট দিয়ে আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করছিস।” উল্লেখ্য, ফাতেমাতুজ জোহরা ইমু আসন্ন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রীসংস্থার প্যানেল থেকে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে ইমু বলেন, “হল ক্যান্টিনের খাবারে মাঝে মাঝে পোকা পাওয়া যায়, এটা সত্যি। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী ভোটের প্রসঙ্গ টেনে আমাকে উদ্দেশ্য করে পোস্ট করেছে। আমিও হুমকি পাই।” অন্যদিকে হলে থাকা সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, “ইমুর প্রভাবের কারণে অনেকেই মুখ খুলতে ভয় পান। হল প্রভোস্টের ঘনিষ্ঠতা ও দায়িত্বে থাকার কারণে তিনি যেভাবে ইচ্ছা আচরণ করেন। কেউ প্রতিবাদ করলে ক্যান্টিনে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।”
এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আঞ্জুমান আরা বলেন, “জকসু নির্বাচন সামনে রেখে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। তবে ইমু যদি মাবুদাকে পোস্ট মুছতে বা মাফ চাইতে বলে থাকে, তাহলে তাকেও মাফ চাইতে হবে। খাবারের মান নিয়েও অভিযোগ পেয়েছি। রোববার এ বিষয়ে বৈঠক করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি আরও বলেন, “হলের খাবারের মান সম্প্রতি নিম্নমুখী। বরবটি ও কলমিশাক নিষিদ্ধ করার পরও আবার আনা হয়েছে কেন, তা খতিয়ে দেখা হবে।”
বিআলো/ইমরান



