• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    ১৬ বছর পর প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকারের 

     dailybangla 
    15th Jun 2025 7:21 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    রতন বালো: দীর্ঘ ১৬ বছর পর অন্তর্বর্তী সরকার আবারও বৃত্তি পরীক্ষা ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে এরই মধ্যে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করে তা জমা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। খসড়া নীতিমালা নিয়ে এক দফা বৈঠকও হয়েছে। শিগগির এ নীতিমালা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।

    প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি শেষ করার পর একসময় বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হতো। তাতে উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে মেধাতালিকায় জায়গা পাওয়াদের দেওয়া হতো মাসিক হারের বৃত্তির টাকা। ২০০৯ সালে চালু হয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা (পিইসিই)। সে বছর থেকে বন্ধ হয়ে যায় বহুল কাক্সিক্ষত বৃত্তি পরীক্ষা। সেসময় থেকেই প্রতিযোগিতামূলক এই পরীক্ষিাটি ফিরিয়ে আনার দাবি করে আসছেন অভিভাবক ও শিকার্থীরা।

    সেসময় বৃত্তি পরীক্ষা বহালের দাবিতে মাঠেও নেমেছিলেন অভিভাবকরা। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তা আমলে নেয়নি। ফলে বৃত্তি পরীক্ষার বিষয়টি ভুলতে বসেছিলেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা। অবশেষে সেই বন্ধ দরজা খোলার সংকেত মিলেছে।

    প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে এরই মধ্যে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করে তা জমা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। খসড়া নীতিমালা নিয়ে এক দফা বৈঠকও হয়েছে। শিগগির এ নীতিমালা আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করা হবে।

    প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি বছরের শুরুর দিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বৃত্তি পরীক্ষা আগের নিয়মে ফেরানোর নির্দেশনা দিয়ে অধিদপ্তরে চিঠি দেয়। পরে অধিদপ্তর আগের নিয়মের সঙ্গে কিছু বিষয় যুগোপযোগী করে খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছে। তা এখন চূড়ান্তভাবে প্রজ্ঞাপন জারির অপেক্ষায়।

    দীর্ঘদিন পর বৃত্তি পরীক্ষা ফেরানোর খবরে খুশি অভিভাবকরা। তারা বলছেন, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা না থাকায় সন্তানদের পড়ার টেবিলে বসানোর অভ্যাস করতে পারছেন না তারা। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা নেই। ফলে শিশু শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা সম্পর্কে কোনো ধারণা না নিয়েই বেড়ে উঠছে। বৃত্তি পরীক্ষা ফিরলে কিছুটা হলেও শিক্ষার্থীরা ধারণা পাবে।

    এ বছর থেকেই বৃত্তি পরীক্ষা হবে, এটা নিশ্চিত। শীঘ্রই বৃত্তি পরীক্ষার নিয়ম-কানুন কি হবে, তার নীতিমালা চূড়ান্ত করে প্রকাশ করবে মন্ত্রণালয়। জানালেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবু নূর মো. শামসুজ্জামান। তবে বৃত্তি পরীক্ষায় বৈষম্য তৈরি হয় বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা। তারা বলছেন, এতে বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীকে আগে থেকে বিশেষ পরিচর্যা করা হয়। তারাই বৃত্তি পরীক্ষা দেয়। বিদ্যালয়ের ফলাফল ভালো দেখানোর জন্য শিক্ষকরা বৃত্তি পরীক্ষা দেওয়া গুটিকয়েক শিক্ষার্থীর দিকে বেশি মনোযোগ দেন।

    প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দুই ধরনের বৃত্তি দেওয়া হয়। একটি হলো ট্যালেন্টপুল, আরেকটি সাধারণ বৃত্তি। ২০০৯ সালে সবশেষ চালু থাকা সময়ে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়া একজন শিক্ষার্থী মাসিক ৩০০ টাকা হারে বৃত্তির অর্থ পেতো। আর সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্তরা পেতো ২২৫ টাকা। বৃত্তি নীতিমালা যুগোপযোগী করায় এবার টাকার পরিমাণও বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমান বাজারমূল্য ও শিক্ষা উপকরণের দাম বিবেচনায় দুই ধরনের বৃত্তির অর্থ দ্বিগুণ করার সুপারিশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

    অধিদপ্তরের বৃত্তি শাখার তথ্যমতে, খসড়া নীতিমালায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তির পরিমাণ ৩০০ থেকে বাড়িয়ে ৬০০ টাকা এবং সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্তদের ২২৫ থেকে বাড়িয়ে ৪৫০ টাকা করার সুপারিশ করেছে অধিদপ্তর। এদিকে এ বিষয়ে ভিন্নমত জানান শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মনজুর আহমদ।

    তার মূল্যায়ন, অভিভাবকদের সাধারণ ধারণা হলো বৃত্তি পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীরা বেশি পড়ালেখা করে। এতে শিক্ষার মানও বাড়বে। কিন্তু বাস্তবে এর বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই। এ পরীক্ষা নিলে বরং ক্ষতি হবে।

    প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপবৃত্তি বিভাগের উপ-পরিচালক রাশেদা বেগম বলেন, আমরা সুপারিশ করতে পারি। সেটা করেছি। বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। আশা করছি, শিক্ষার্থীদের বর্তমান খরচের হিসাব বিবেচনায় নিয়ে বৃত্তির টাকা বাড়ানো হবে।

    বৃত্তি পরীক্ষা ডিসেম্বরে, অংশ নেবে কত শিক্ষার্থী :
    চলতি বছর থেকেই বৃত্তি পরীক্ষা চালু করা হবে। পঞ্চম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা শেষে ডিসেম্বরের মধ্যেই এ পরীক্ষা আয়োজনে সব পদক্ষেপ নেবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০ শতাংশ শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে। সেটিও কিছুটা বাড়ানোর সুপারিশ করেছে অধিদপ্তর।

    প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আবু নূর মো. শামসুজ্জামান বলেন, এ বছর থেকেই বৃত্তি পরীক্ষা হবে, এটা নিশ্চিত। শীঘ্রই বৃত্তি পরীক্ষার নিয়ম-কানুন কি হবে, তার নীতিমালা চূড়ান্ত করে প্রকাশ করবে মন্ত্রণালয়। কত শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আগের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ হারে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা দিতে দেওয়া হতো। এটা এখন বাড়ানো প্রয়োজন বলে আমরা মনে করছি। সেজন্য এটা ২০ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

    প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলছেন না। তাদের ভাষ্য, বিষয়টি স্পর্শকাতর। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের আগে এ নিয়ে তারা কথা বলতে পারবে না।

    ‘ডিসেম্বরে বৃত্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ পরীক্ষার নীতিমালার খসড়া অধিদপ্তর তৈরি করেছে। সেটি এখন পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে ঈদের পর নীতিমালাটি প্রকাশ করে বৃত্তি পরীক্ষা আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু হবে।’ – প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।

    প্রাথমিক সহকারি শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, সরকারি প্রাথমিকে নানান কারণে শিক্ষার্থী ধরে রাখা কষ্টসাধ্য হচ্ছে। অনেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় ছেড়ে ইংলিশ মিডিয়ামে ভর্তি হচ্ছে। অনেকে আবার মাদরাসায় ঝুঁকছে। বৃত্তি পরীক্ষাটা যদি শুধু সরকারি প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য করা হয়, তাহলে সবাই সন্তানকে সরকারি স্কুলে দেবে। সেজন্য আমরা পুনরায় চালু হতে যাওয়া প্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষায় শুধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছি।

    বিআলো/তুরাগ

    এই বিভাগের আরও খবর
     

    ফরহাদ হত্যার প্রতিবাদে লাশ নিয়ে থানার সামনে বিক্ষোভ

    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    July 2025
    M T W T F S S
     123456
    78910111213
    14151617181920
    21222324252627
    28293031