১৯৭১- এর আকাঙ্ক্ষাকে পাশ কাটালে তা আত্মঘাতী হবে: মাহফুজ আলম
নিজস্ব প্রতিবেদক: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম বলেছেন, অনেকেই আছেন, যারা ১৯৭১ সালের আকাঙ্ক্ষাকে পাশ কাটিয়ে যেতে চাইছেন। সেটা করা যাবে না। ১৯৭১-কে পাশ কাটিয়ে এগোতে চাইলে তা আত্মঘাতী হবে। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মানুষের আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে এখনকার মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে যুক্ত করতে হবে। এটা শুধু রাজনৈতিক দলের বিষয় নয়। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের কথা শুনতে হবে। সংবিধান পুনর্লিখন করতে হলে তা ১৯৭১–এর মানুষের আকাঙ্ক্ষার ধারাবাহিক হতে হবে।
শনিবার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ, সংবিধান প্রসঙ্গ’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সাবেক সমন্বয়ক মাহফুজ আলম। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে এ সংলাপের আয়োজন করা হয়।
মাহফুজ আলম বলেন, এই সরকার মানুষের ইচ্ছাকে কতটা মূল্যায়ন করে, সেটা দেখতে হবে। ১৯৭২ সালের সংবিধান আদর্শিকভাবে একপক্ষীয় ছিল। সেখানে দলের মূলনীতি ও সংবিধানের মূলনীতি এক ছিল। সেই জায়গা কিন্তু এখন নেই। ওই আদর্শিক জায়গায়টা পুনর্নির্মাণের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দলের আদর্শিক জায়গার এখনো পরিবর্তন হয়নি। তাদেরও সেই জায়গায় পরিবর্তন আনতে হবে।
এখনও ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা রয়ে গেছে, এর বিলোপ করে নতুন বন্দোবস্ত জরুরি বলে মন্তব্য করে মাহফুজ আলম বলেন, গণঅভ্যুত্থান ছিল একটি সমন্বিত প্রয়াস। নব্বইয়ে যে একটি রাজনৈতিক বন্দোবস্ত হয়েছিল তা ওয়ান-ইলেভেনে ভেঙে যায়। তখন থেকে জনমানুষের আকাঙ্ক্ষার জায়গা ধূলিসাৎ হয়েছে।
ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ সাধনে সব স্তর থেকেই লড়াই হয়েছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের জনগণ অনেক বৈচিত্র্যপূর্ণ। কিন্তু সকলকে এক বলয়ে নিয়ে আসার অপচেষ্টার ফলে এই ফ্যাসিবাদের জন্ম হয়। নতুন বাংলাদেশে সবাইকে কীভাবে ধারণ করা যায় সেটিই এখনকার আলোচনা। বাঙালি জাতীয়তাবাদ থেকে কীভাবে ফ্যাসিবাদের উৎপত্তি হলো তা অনুসন্ধানের পাশাপাশি দেশকে একটি সভ্যতাগত রূপান্তরের মধ্য দিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন লিয়াজোঁ কমিটির এ সমন্বয়ক।
সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনামের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর, ঢাকা ট্রিবিউন সম্পাদক জাফর সোবহান, সংবাদ সম্পাদক আলতামাশ কবির, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, প্রতিদিনের বাংলাদেশ সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, দেশ রূপান্তর সম্পাদক মোস্তফা মামুন, সংবাদের নির্বাহী সম্পাদক শাহরিয়ার করিম প্রমুখ।
এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী (নাসির আব্দুল্লাহ), আকরাম হুসাইন, ভূঁইয়া আসাদুজ্জামান, মামুন আব্দুল্লাহিল ও আরিফুল ইসলাম আদীব; সমন্বয়কদের মধ্যে সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ এবং নাগরিক কমিটি থেকে প্রতিনিধি হিসেবে সামান্তা শারমীন উপস্থিত ছিলেন।
বিআলো/শিলি