৭ মাসেও চালু হয়নি নোয়াখালীর সুবর্ণচর এক্সপ্রেস
সাজ্জাদুল ইসলাম, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী): ঢাকা থেকে নোয়াখালীতে সুবর্ণচর এক্সপ্রেস নামের নতুন এক জোড়া আন্ত:নগর ট্রেন চালু করার কথা ছিলো বাংলাদেশ রেলওয়ের। তবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ৭ মাসেও চালু হয়নি সেটি। দ্রুত ট্রেনটি চালুর দাবিতে মানববন্ধন সহ নানা কর্মসূচি পালন করছে নোয়াখালীর বিভিন্ন সংগঠন।
তবে ট্রেনটি চালু হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তার আভাস মিলছে। সুবর্ণচর এক্সপ্রেস সম্পর্কে কথা বলতে রাজি নন রেল ভবনের কর্মকর্তারা। চলতি বছরের গত ১০ এপ্রিল নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন করেছে নোয়াখালীর কয়েকটি সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। মানববন্ধনে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন হওয়া সত্ত্বেও কোন অদৃশ্য ইশারায় সুবর্ণচর এক্সপ্রেস বাস্তবায়নের কাজ আটকে আছে সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন। আন্দোলনকারীরা অনতিবিলম্বে সুবর্ণচর এক্সপ্রেস চালুসহ নিঝুম এক্সপ্রেস নামে আরো একটি নতুন ট্রেন চালুর দাবি জানান।
রেল ভবনের সূত্র জানায়, সুবর্ণচর এক্সপ্রেসের সাথে আরো চারটি রুটে নতুন রেল চালুর কথা ছিলো। তার মধ্যে ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা রুটে একজোড়া নতুন ট্রেন ও খুলনা-যশোর-মোংলা রুটেও নতুন কমিউটার ট্রেন চালু বেলা ভবন হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ঢাকা- নোয়াখালী-ঢাকা রুটে সুবর্ণচর এক্সপ্রেস চালু হবে। তবে কবে নাগাদ এটি চালু হতে পারে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কিছু জানা যায়নি।
সুবর্ণচর এক্সপ্রেস সম্পর্কে বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রাফিক ট্রান্সপোর্টেশনের উপ- পরিচালক মো. শওকত জামিল মোহসীর সাথে কথা হলেও স্পষ্টভাবে কিছু জানান নি তিনি। কবে চালু হতে পারে অথবা আদৌ চালু হবে কিনা সে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। কথা বলতে বলেছেন রেলের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলীর সাথে। তবে টিএনটি নাম্বারে কয়েকবার চেষ্টা করেও মহাপরিচালকের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
পরবর্তীতে অতি, মহাপরিচালক মো. আরিফুজ্জামানের মুঠোফোনে কয়েকবার কল দিলেও সেটি রিসিভ হয়নি। সুবর্ণচর এক্সপ্রেস গত বছরের ৭ জুন রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে গত বছরের ১৫ নভেম্বর উপসচিব তৌফিক ইমাম সইকরা এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা- নোয়াখালী-ঢাকা রুটে নতুন এক জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালু করার তথ্য জানানো হয়েছিলো। সেসময় নতুন আন্তঃনগর ট্রেনটির নামও নির্ধারণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে গত ২৯ অক্টোবর চট্টগ্রামের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ আবু বরক সিদ্দিকী সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিলো, যাত্রী সাধারণের স্বাচ্ছন্দ্য ভ্রমণের নিমিত্ত ঢাকা-নোয়াখালী-ঢাকা রুটে চায়না কোচ দ্বারা ১ জোড়া নতুন আন্ত.নগর ট্রেন পরিচালনা করা যেতে পারে। প্রস্তবনায় বলা হয়েছিলো, নতুন ওই ট্রেনের নম্বর ৮১৭/৮১৮। ১৪ কোচের নতুন এ ট্রেনে মোট আসন থাকবে ৬৭৯ টি।
সাপ্তাহিক বন্ধ থাকবে শুক্রবার। প্রস্তাবিত ট্রেনের সময়সূচিতে বলা হয়েছিলো, ৮১৭ নং ট্রেনটি নোয়াখালী ছাড়বে ২ টা ৩০ মিনিটে আর ঢাকা পৌঁছাবে ৮ টা ১০ মিনিটে। আর ৮১৮ নং ট্রেনটি ঢাকা ছাড়বে সকাল ৮ টায় ও নোয়াখলী পৌঁছাবে ১ টা ৩০ মিনিটে। ট্রেনটি মাইজদি, চৌমুহনী, বজরা, সোনাইমুড়ী, নাথের পেটুয়া, লাকসাম, কুমিল্লা, কসবা, আখাউড়া, বি-বাড়িয়া, ভৈরব, নরসিংদী ও ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশনকে যুক্ত করবে। প্রসঙ্গত, ১৯৮৬ সালে নোয়াখালীবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা-নোয়াখালী রেলপথে আন্তঃনগর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন চালু হয়। ঢাকা থেকে বর্তমানে এ রুটে একমাত্র আন্ত:নগর ট্রেন এটি।
বিআলো/তুরাগ