অগ্রহায়ণেই মাঘের শীত: কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে কাঁপছে লাখো মানুষ
মো. আশিকুর রহমান: কুড়িগ্রামে এবার শীত যেন ক্যালেন্ডারের ধার ধারছে না। অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি সময়েই তাপমাত্রা নেমে গেছে ১৩.৫° সেলসিয়াসে। রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এটিই এ মৌসুমের সর্বনিম্ন। পৌষ-মাঘ তো এখনো অনেক দূর, তবু চরাঞ্চলের মানুষের কাছে এখনই যেন মাঘের শেষ রাত।
সবচেয়ে বিপদে চরের সাড়ে পাঁচ লাখ বাসিন্দা। ১৬টি নদ-নদীতে ঘেরা ৪৬৯টি চরে উত্তরের হিমেল হাওয়া বাধাহীনভাবে ঢুকে পড়ছে। বৃদ্ধ-শিশুরা সবচেয়ে অসহায়। একটি মাত্র পাতলা কম্বল বা চটের বস্তা গায়ে জড়িয়ে রাত কাটাতে হচ্ছে অনেক পরিবারকে। রাজিবপুরের আব্দুল মালেক বলছিলেন, “বাচ্চাগুলোর জন্য একটা গরম জামাও কিনতে পারি নাই। রাতে একটা কম্বল দিয়ে চারজন গুটিসুটি মেরে শুয়ে থাকি।”
কুয়াশাও এবার বেজায় ঘন। সকাল ১০টা পর্যন্ত রাস্তায় কিছু দেখা যায় না। যানবাহন চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে, ধীরগতিতে। কৃষি শ্রমিকরা মাঠে যেতে পারছেন না। রৌমারীর রবিউল বললেন, “হাত-পা অবশ হয়ে যায়। কাজ না করলে পরিবার না খেয়ে থাকবে।”
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুখবর আছে। ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল মতিন জানিয়েছেন, ৯টি উপজেলায় ৫৪ লাখ টাকার শীতবস্ত্র ক্রয়ের বরাদ্দ এসেছে। খুব শিগগিরই কম্বল-চাদর কিনে বিতরণ শুরু হবে। তবে চর উন্নয়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শফিকুল ইসলামের আশঙ্কা, এই বরাদ্দ খুবই সামান্য। পৌষ-মাঘে তাপমাত্রা আরও নামলে এটা দিয়ে কিছুই হবে না।
তাই এখনই বেসরকারি উদ্যোগ, দাতব্য সংস্থা ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসা দরকার। কুড়িগ্রামের চরের মানুষের জন্য একটি কম্বলও এখন প্রাণ বাঁচানোর সমান।
বিআলো/এফএইচএস



