‘আলী’: ভাই-বোনের অমলিন ভালোবাসার গল্প নিয়ে সিনেমা
বিনোদন প্রতিবেদক: পাহাড়ের শান্ত, নির্জন কোল ঘেঁষে জন্ম নেওয়া দুই ভাই-বোন—আলী ও রশ্নি। প্রকৃতির রুক্ষ সৌন্দর্যের মতোই তাদের জীবনও কঠিন, তবু মমতাময়। সেই মমতাকে সেলুলয়েডে বন্দি করতে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র ‘আলী’, পরিচালনা করেছেন বিপ্লব হায়দার।
আলী চরিত্রে রূপ দিয়েছেন ইরফান সাজ্জাদ, আর বোন রশ্নিকে ফুটিয়ে তুলেছেন প্রতিজ্ঞা। দুই অভিনেতার সংলাপের চেয়ে বেশি প্রকাশ পেয়েছে নীরব ভাষা—চোখের ভাষা, দেহভঙ্গি আর অন্তর্লুকানো বেদনার ভাষা।
রশ্নির স্বপ্ন ছিল শহরে পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর। কিন্তু ভাই আলীর চোখে শহর মানে অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা। যে ভাই স্নেহের পরশে বোনকে আগলে রাখতে চায়, সে-ই ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে হারিয়ে ফেলে বোনকে। এক দুর্ঘটনা ভেঙে দেয় তাদের দুজনের জীবনের বুনন।
এরপর বাকপ্রতিবন্ধী আলীর নীরব সংগ্রাম। নিঃসঙ্গতা, অবিচার, অবহেলা—সব কিছুর সাথে পাঞ্জা লড়ে টিকে থাকা এক মানুষের গল্প। অন্যদিকে রশ্নির জীবনও থেমে যায় না। ভাইকে খুঁজে ফেরে সে, অপেক্ষার আগুনে নিজেকে পোড়ায়, তবু হারে না। এই সিনেমা যেন প্রমাণ করে, রক্তের সম্পর্ক শুধু জন্মদাতা নয়, বাঁচিয়ে রাখারও।
পরিচালক বিপ্লব হায়দারের যাত্রা শুরু হয়েছিল ক্যামেরা সহকারী হিসেবে। ছোট পর্দায় পরিচিতি পাওয়ার পর বড় পর্দায় তার প্রথম কাজ ‘ভয়াল’ দিয়ে নজর কেড়েছিলেন। ‘আলী’ তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র, যেখানে তিনি আরও পরিণত, আরও সংবেদনশীল নির্মাতা হিসেবে হাজির হয়েছেন।

অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ ছবিটি নিয়ে রীতিমতো আবেগাপ্লুত। তার কথায়—
“এই কাজটি হয়তো আমার ক্যারিয়ারের সেরা হয়ে থাকবে। ভাই-বোনের এমন এক সম্পর্কের গল্প, যা আমাদের সবার ভেতরেই কোথাও স্পর্শ করে যায়। আমরা সবাই মিলে খুব মন দিয়ে কাজ করেছি। আশা করি দর্শকও সেই মমতা অনুভব করবেন।”
চলচ্চিত্র ‘আলী’ শুধু ভাই-বোনের ভালোবাসার গল্প নয়—এ এক মানবিক দলিল, যেখানে শব্দের চেয়ে বড় হয়ে ওঠে স্পর্শ, বিরহের চেয়ে গভীর হয় প্রত্যয়। কঠিন পৃথিবীর বুকেও ভালোবাসা যে মরতে পারে না, তা-ই যেন বলতে আসে এই ছবি।
শিগগিরই প্রেক্ষাগৃহে আসতে চলেছে ‘আলী’। পাহাড়ের নীরবতায় যে বেদনা আছে, শহরের কোলাহলে যে শূন্যতা আছে—সব মিলিয়ে এই ছবি হতে পারে এক অনন্য দর্শন-অভিজ্ঞতা। দর্শক অপেক্ষা করছেন এমন এক গল্পের জন্য, যেখানে ভালোবাসা শুধু রক্তের নয়, বেঁচে থাকারও শর্ত।
বিআলো/তুরাগ