ইচ্ছা থাকলে পথও তৈরি হয়: নিজেরাই রাস্তা সংস্কার করে নজির গড়ল কেদারপুরের মানুষ
ফাহিম আহমেদ, বাবুগঞ্জ (বরিশাল): ধুলোমাখা রাস্তায় ফুটছে উন্নয়নের হাসি—নিজেদের হাতেই বদলে যাচ্ছে কেদারপুর গ্রাম। যেন বলে দিচ্ছে, “ইচ্ছা থাকলে পথও তৈরি হয়।” বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের প্রায় তিন শতাধিক সাধারণ মানুষ এমনই এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন। কেদারপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সিকদারবাড়ি থেকে মোল্লাবাড়ি পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ হেরিংবন সড়কটি দীর্ঘ দুই যুগ ধরে ছিল খানাখন্দে ভরা। প্রতিদিন এই পথে দুর্ভোগ পোহাতে হতো স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, কর্মজীবী মানুষ ও সাধারণ পথচারীদের। হেরিংবনের ইট উঠে যাওয়া এবং কিছু অংশ খালের ভেতরে বসে যাওয়ায় সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করেও কোনো কার্যকর উদ্যোগ না পেয়ে অবশেষে নিজেদের উদ্যোগেই রাস্তা সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেন এলাকাবাসী।সোমবার (৩ নভেম্বর) সকাল থেকে এলাকার শতাধিক যুবক, বৃদ্ধ ও বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে শুরু করেন রাস্তা সংস্কারের কাজ। নিজেদের অর্থ, শ্রম ও ভালোবাসায় তারা গড়ে তুলছেন গ্রামের নতুন আশার পথ—একটি নিজস্ব উদ্যোগে উন্নয়নের দৃষ্টান্ত। এই মানবিক উদ্যোগে নেতৃত্ব দেন মোঃ জাহাঙ্গীর মাল, মো. আনিসুর রহমান খান, এইচ.এম. জামাল উদ্দিন মাস্টার, মো. ইব্রাহিম খলিল, মো. আরিফ হোসেন, মোঃ আবুল বাশার, মো. সায়েম খান, নূর হোসেন খান ও মো. ফারুক হোসেনসহ প্রায় তিন শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক। স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আনিসুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার অবস্থা ছিল খুবই নাজুক। অবশেষে এলাকার তরুণরা এগিয়ে এসে নিজেরাই সংস্কার শুরু করায় আমরা সত্যিই গর্বিত।
স্থানীয় যুবক আরিফ হোসেন বলেন, আমরা কারো দোষ দিইনি, ভেবেছি—গ্রামটা আমাদের, উন্নয়নও আমাদেরই দায়িত্ব। পার্শ্ববর্তী স্কুলের শিক্ষিকা শারমিন জাহান বলেন, এই পথে প্রতিদিন শতাধিক শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। রাস্তাটি সংস্কারের ফলে এখন তাদের চলাচল অনেক নিরাপদ হয়েছে। দীর্ঘ দুই যুগ পর সেই অবহেলিত পথ আজ আবার প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। ধুলার মাঝেও ফুটছে উন্নয়নের হাসি—কেদারপুরের তরুণদের হাতে বদলে যাচ্ছে গ্রাম, যেন নতুন করে লিখছে প্রেরণার গল্প ,নিজের গ্রামের উন্নয়নে নিজেরাই পথ দেখাও।
বিআলো/ইমরান



