ইশরাক হোসেনের জন্য রাস্তায় নেতাকর্মী; দুর্ভোগ বাড়ালো বৃষ্টি!
আমিনুল ইসলাম: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন মেয়র হিসেবে ঘোষণা ও দ্রুত শপথের কার্যক্রম গ্রহন করার দাবিতে রাস্তায় নেমেছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি ও তার অঙ্গ সহযোগী ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর গোলাপ শাহ (রঃ) এর মাজার শরীফের আশপাশের স্থান সমূহে নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়ে শ্লোগান দিচ্ছে। কেউ কেউ রাস্তার উপর বসে আছে।তাদেরকে ঘিরে শ্লোগান দিচ্ছে নেতাকর্মীরা।ট্রাকে স্টেজ করে মাজারের সামনে প্রতিবাদী গান চালানো হচ্ছে। এছাড়াও নগর ভবনের সামনে রাস্তার উপর একটি স্টেজ করেছ তারা।
তার মধ্যে হঠাৎ বৃষ্টিতে স্থবির অবস্থা বিরাজ করছে ঢাকার বিভিন্ন জনচলাচলের স্থান সমূহে।রাজধানীর গুলিস্তানে ঢাকা ফ্লাইওভারের পয়েন্ট থেকে শহীদ নুর হোসেন চত্ত্বর (জিরো পয়েন্ট)পর্যন্ত বিশাল যানজট। অপরপাশে বিআরটিসি কাউন্টার থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ও যানজট ছিলো চোখে পরার মতো। এছাড়া পল্টন মোড়,মৎস্য ভবন,শাহবাগ, কারওয়ান বাজার এলাকায় ও যানজট ছিলো। এদিকে ঢাকা পূর্বাঞ্চলের যাত্রাবাড়ী,শনির আখড়ায়ও যানজট ছিলো। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাতুয়াইল মেডিকেল থেকে সাদ্দাম মার্কেট পর্যন্ত প্রায় এক ঘন্টা যানজট ছিল। অপরদিকে ঢাকাগামী রাস্তায়ও যানজট লেগে ছিলো।এছাড়াও ঢাকা সিলেট মহাসড়ক যানজটে আবদ্ধ ছিলো।
ঢাকার গুলিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ দুটি মোড়ে অবরোধ কর্মসূচির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকাবাসী।ঘণ্টার পর ঘন্টা ধরে সড়ক অবরোধের মধ্যে ঝুম বৃষ্টিতে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। অফিস ছুটির মুহূর্তে রাজধানীর বিভিন্ন মূল সড়ক ছাপিয়ে তীব্র যানজট ছড়িয়ে পড়েছে অলিগলিতেও। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে অফিস ফেরত ঘরমুখো যাত্রীরা। মতিঝিলের একটি বেসরকারি কম্পানীতে চাকরি করেন অমিত দাস অফিস ছুটির পর বৃষ্টির মধ্যে দৌড়ে গাড়িতে উঠলেন তিনি। নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশ্যে যাওয়া অমিত দাস জানান, মতিঝিল থেকে গুলিস্তানে আসতেই তিনি পুরো ভিজে গেছেন। বাংলা মোটর রূপায়ন টাওয়ার থেকে মাতুয়াইল মেডিকেল গামী প্রকৌশলী জাকির হোসেন দৈনিক বাংলাদেশের আলোকে বলেন, হঠাৎ বৃষ্টিতে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে বৃষ্টি না থামায় তিনি বৃষ্টিতে ভিজেই পরিবহনের কাউন্টারে যাচ্ছেন।
রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক পয়েন্ট গুলোতে ছাতা মাথায় দিয়ে ডিউটি করছেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।পল্টন মোড়ে ডিউটি পালনরত এক পুলিশ সদস্য জানান বৃষ্টিতে ভিজে হলেও তো দায়িত্ব পালন করতে হবে। এ সময় তাকে রাস্তার যানজট সারানোর জন্য পল্টন মোরে দুই দিকে গাড়িতে সিগন্যাল দেওয়া অবস্থায় দেখা গেছে।এছাড়া ঢাকা পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাত্রাবাড়ীর এ কে স্কুল এন্ড কলেজ, রফিকুল ইসলাম কলেজ মাতুয়াইলে অবস্থিত শামসুল হক খান স্কুল এন্ড কলেজ, রোকেয়া আহসান কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বৃষ্টিতে রাস্তায় পানি জমায় কোমর পরিমান পানিতে ভিজে বাসায় যেতে দেখা যায়। অলি গলিতে থাকা যানবাহনগুলোর চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে।মাতুয়াইল মহিলা মাদ্রাসা রোডে এক ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে একটি অটো রিক্সা পান বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত জাহানারা হোসেন।
এছাড়া রাস্তার পাশে ছোট বড় দোকানগুলোকে সামিয়ানা টাঙিয়ে মালামাল বিক্রি করতে দেখা যায়। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোহাম্মদ বেলাল আহমেদ জানান, দুপুর ২ টা থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ে মুশলধারায় বর্ষন হচ্ছে।এর জন্য তাকেও সবার মতো সামিয়ানা দিয়ে দোকানদারি করতে হচ্ছে।
এদিকে দু’চারটা অটোরিকশার দেখা মিললেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন যাত্রীদের কাছ থেকে। যার ফলে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের। রিকশা ও অটো চালকদের দাবি বৃষ্টিতে মটার ভিজে গেলে এটা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে, তাই তারা ভাড়া বেশি নিচ্ছে!
“বৃষ্টিতে নগরজীবনের এ ভোগান্তি নতুন কিছু নয় বলে আক্ষেপ করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৫ নং ওয়ার্ডের প্রবীণ ব্যবসায়ী রেজাউল করিম।” তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বে অবহেলা ও স্থানীয় বসবাসকারীদের অসচেতনতা, ড্রেনেজ অব্যবস্থাপনা এসব বিভিন্ন কারণে আমাদের এ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
বিআলো/তুরাগ