উপকূল থেকে জাতীয় মঞ্চে উত্থান—রতন সরকার পদক পেলেন সাংবাদিক তারিক লিটু
নিজস্ব প্রতিবেদক : সুন্দরবনঘেঁষা কয়রা উপজেলার তরুণ অনুসন্ধানী সাংবাদিক তারিক লিটু এবার পৌঁছে গেছেন জাতীয় পর্যায়ে। সাহসী ও দায়বদ্ধ সাংবাদিকতার জন্য তিনি পেয়েছেন সম্মানজনক চারণ সাংবাদিক রতন সরকার স্মৃতি পদক-২০২৪।
ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে তাঁকে এই পদক তুলে দেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)-এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্টজনেরা তারিক লিটুর প্রশংসা করে বলেন, তিনি শুধু একজন সাংবাদিক নন-তিনি মফস্বল সাংবাদিকতার নির্ভরযোগ্য মুখ। সাহস, সততা ও দায়িত্ববোধের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছেন তিনি।
বর্তমানে তিনি দৈনিক আজকের দর্পণ-এর কয়রা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন। এর আগে তিনি সমকাল, জাগো নিউজ, যায়যায়দিন-সহ একাধিক জাতীয় গণমাধ্যমে যুক্ত ছিলেন। দুর্নীতি, প্রশাসনিক অনিয়ম, বন ও ভূমিদস্যুতা, নদীভাঙন এবং জলবায়ু সংকট নিয়ে তাঁর ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন এলাকায় আলোড়ন তোলে এবং প্রশাসনিক সচেতনতাও বাড়ায়।
মাঠভিত্তিক সাংবাদিকতায় তারিক লিটুর লেখনী বরাবরই ছিল গভীর অনুসন্ধাননির্ভর। কখনো নদীভাঙনে বিপর্যস্ত মানুষের গল্প, কখনো বন দস্যুদের দৌরাত্ম্য, আবার কখনো ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম-সবসময় তিনি তুলে ধরেছেন জনস্বার্থের বাস্তব চিত্র।
এই সাহসী প্রতিবেদনের কারণে তাকে হুমকি, হামলা এবং একাধিক মিথ্যা মামলারও মুখোমুখি হতে হয়েছে। তবু তিনি পিছু হটেননি-বরং আরও অগ্রসর হয়েছেন। তার ভাষায়,
সাংবাদিকতা সত্যের পক্ষে হতে হবে, যেকোনো মূল্যে। এই পদক শুধু আমার নয়, এটা মাঠের প্রতিটি সংগ্রামী সাংবাদিকের প্রাপ্তি।
তারিক লিটুর সাংবাদিকতা জীবনের শুরু হয় গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময়। তখন তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘গোবিপ্রবি প্রেসক্লাব’। পরে নিজ এলাকায় ফিরে গড়ে তোলেন ‘কয়রা সাংবাদিক ফোরাম’। ছাত্রাবস্থার সেই অভিজ্ঞতা আজ তাকে পরিণত করেছে দক্ষ ও সাহসী এক মাঠসাংবাদিকে।
সংবাদপত্রের বাইরেও সামাজিক নানা উদ্যোগে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত। জলবায়ু সচেতনতা, দুর্যোগ প্রস্তুতি, মানবিক সহায়তা কিংবা শিক্ষাবিষয়ক স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে তার অংশগ্রহণ তাকে মানুষের কাছাকাছি এনেছে।
বিআলো/এফএইচএস