ঋণখেলাপি সন্ত্রাসী সুরুজ মিয়াকে গ্রেফতারের দাবিতে জুলাই যুদ্ধা সংগঠনের সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঋণখেলাপি সন্ত্রাসী সুরুজ মিয়াকে আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার না করলে আমরা কঠোর কর্মসূচি পালন করব বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি ভাইস চেয়ারম্যান ও ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার।
মঙ্গলবার ২১ অক্টোবর জাতীয় পার্টি অফিসের পার্সে , কাকরাইল,৬৩/১ নির্মাণ সামাদ সেন্টার আফিয়ার রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি ও ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের উদ্যোগে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন ।
অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার বলেন,সুরুজ মিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর মামলা চলমান থাকলেও কোন চালিকাশক্তির ইশারায় এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। এই রহস্য উদঘাটন আজ সময়ের দাবি।নারায়ণগঞ্জের কুখ্যাত সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মিয়া দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাস, স্বাস, দখলবাজি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা ও হত্যাকাণ্ডসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে। জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর চালানো গণহত্যার সহযোগী হিসেবেও তার নাম উঠে এসেছে, যা জাতির বিবেককে আহত করেছে।
তিনি বলেন,এলাকাবাসী অভিযোগ করেছে বন্দর থানাসহ নারায়ণগঞ্জের আশপাশ এলাকায় সুরুজ মিয়া ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলা চলমান। তবুও প্রশাসনের নীরবতা ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক আশ্রয়ের কারণে তারা এখনো বেপরোয়াভাবে দখল ও চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে সাধারণ মানুষ ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।এছাড়া বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের বড় কেলেঙ্কারিগুলোর একটি হলো বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংককে কেন্দ্র করে সুরুজ মিয়ার জালিয়াতি। তিনি ৮৮ কোটি টাকার ঋণ খেলাপি। শুধু তাই নয়, তার প্রভাবে ৪৮ কোটি টাকার সুদ মওকুফের অবৈধ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোশাররফ হোসেন এ জালিয়াতি প্রক্রিয়ায় সায় না দেওয়ায় ষড়যন্ত্র করে তাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। এ ঘটনায় ব্যাংক খাতের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন,আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, সুরুজ মিয়া কোন শক্তির প্রশ্রয়ে এতদিন ধরেই আইনের ঊর্ধ্বে থেকে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে তা জনমনে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনগণ আজ আর নীরব নয়। এলাকাবাসী সর্বস্তরের মানুষ সন্ত্রাসী সুরুজ মিয়া ও তার বাহিনীর হাত থেকে মুক্তি চায়।
তাদের দাবি সমূহ:- ১. শীর্ষ ঋণ খেলাপি ও সন্ত্রাসী সুরুজ মিয়াকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। ২. তার বিরুদ্ধে চলমান সব মামলা দ্রুত বিচার আইনে নিষ্পত্তি করতে হবে। ৩. ব্যাংক জালিয়াতি, সুদ মওকুফ কেলেঙ্কারি ও দুর্নীতির ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট সকলকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। ৪. জুলাই গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে ছাত্রজনতার ওপর সংঘটিত গণহত্যায় তার সহযোগিতার বিষয়টি তদন্ত করে চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ৫. নারায়ণগঞ্জ ও বন্দর এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
কর্মসূচি:
দুদকের পরিচালক বরাবর স্মারক লিপি (আগামীকাল বুধবার’ ২২ অক্টোবর’। দুপুর ১ টায় প্রদান করা হবে। সুরুজ মিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর মামলা চলমান থাকলেও মামলায় অভিযুক্ত করার পরেও সুরুজ মিয়া-এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। প্রকাশ্যে বীর দর্পের মতন ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ রহস্য উদঘাটন আজ সময়ের দাবি।
আগামী বৃহস্পতিবার ২৩ অক্টোবর’। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।
ঘোষিত বিষয়গুলো পদক্ষেপ গ্রহণের কার্যকরী অভিযোগ দায়ের করে সরকার ও প্রশাসনের নিকট যে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম কার্যকরীর সীদ্ধান্তকে প্রশাসন কর্তৃক তাদের পদক্ষেপের উপর পর্যালোচনা করে ঘোষিত সময়ের পরপরই জাতীয় প্রেসক্লাবে কর্মসূচি আয়োজন করা হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের এই দাবিগুলোর প্রাসঙ্গিকতা কার্যকর করা না হবে এতে আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সরকার ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে কঠিন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলমান চলতেই থাকবে।
পরিশেষে সাংবাদিক বন্ধুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই-এ ধরনের সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ ও ঋণ খেলাপিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় না দিয়ে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় জনগণের ক্ষোভ একসময় ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরবেন: বাংলাদেশ মানবাধিকার সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান ও ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার ,উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক ইকরাম মাহমুদ,
প্রচার সম্পাদক সুহিল ইরফান কৌশিক, দিলিপ কুমার, জাহাঙ্গীর আলম, সোহেল আহমেদ প্রমুখ।
এফআআর/বিআলো/এফএইচএস



