এই মুহূর্তে মুসলিম বিশ্ব ইসরাইলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার প্রয়োজন: হাবিবুর রহমান হাবিব
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্ব সন্ত্রাসী, বিশ্ব শান্তির ক্যন্সার, দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর ইরানে সামরিক হামলা, গাজায় ধারাবাহিক গণহত্যাসহ অব্যাহত আগ্রাসন, জাতিগত নিধন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের বিরুদ্ধে সমগ্র মুসলিম বিশ্বসহ শান্তিকামী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সোচ্চার হবার’ আহ্বান জানান বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জননেতা হাবিবুর রহমান হাবিব ।
বুধবার (১৮ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এই কথা বলেন।
হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, বিশ্বনেতাদের মধ্যস্থতা জরুরী ভিত্তিতে সমস্যা সমাধান করা উচিত,মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানের রাজধানী তেহরানে পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাকে মূল লক্ষ্যবস্তু করে ইসরায়েল একাধিক হামলা চালিয়েছে। এর পাল্টা জবাবে ইরানও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের ওপর। এর আগে গত বছর উভয় দেশ একে অন্যের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা করে। কিন্তু অতীতের যেকোনো সংঘাতের চেয়ে এবারে ইরানের ওপর ইসরায়েলের হামলা এবং ইরানের দেওয়া পাল্টা জবাব অনেক বেশি বিস্তৃত।
তিনি বলেন,পৃথিবীর দুই প্রান্তে এখন দুটি প্রত্যক্ষ যুদ্ধ চলছে। ইউরোপে চলছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধ চলছে ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের আগ্রাসন। সম্প্রতি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল ভারত-পাকিস্তান। চিরবৈরী এই দুই দেশও দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে,এমন শঙ্কা দেখা দিলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় সে আশঙ্কা সত্যি হয়নি। এখন ইরান ইসরাইলের সংকটে উল্টো ইরানকে নিঃশর্তে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানাচ্ছে, ট্রাম্প যেভাবে ইরানের প্রতি ‘আরও ভয়াবহ হামলা করার কথা বলছে’,ফলে তার একমুখী নীতির কারণে বিশ্বে পারমাণবিক যুদ্ধ লেগে যেতে পারে,তাই বর্তমানে মুসলিম বিশ্ব একত্রিত হয়েছে ইজরাইল আমেরিকার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো উচিত বলে আমি মনে করি।
তিনি আরো বলেন, ‘বিশ্ব মোড়ল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মদদেই ইরানে ইসরায়েলের বেপরোয়া সামরিক হামলা। ইসরাইল আন্তর্জাতিক বিধিবিধানকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে মধ্যপ্রাচ্যে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ইরানে সামরিক হামলা ও ফিলিস্তিনের গাজায় ধারাবাহিক গণহত্যা তার চূড়ান্ত ঔদ্ধত্যমূলক আচরনের বহিঃপ্রকাশ।’ইসরায়েলি এমন বর্বরতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। একই সাথে গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা প্রকাশ করে বলতে চাই, অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলকে পৃষ্ঠপোষকতা দানকারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ তার মিত্র দেশগুলো এ দায় এড়াতে পারে না। গত কয়েকদিনে ইরানে ইসরাইলী বিমান হামলায় শিশুসহ শতশত নারী-পুরুষ নিহত হয়েছে। আমরা জাতিসংঘ, ওআইসি, আরবলীগসহ মানবাধিকার রক্ষাকারী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ইরান, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনে গণহত্যার দায়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।ইরানের বিরুদ্ধে এই পরিকল্পিত হত্যাকান্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বিগত এক দশকে ইসরাইল ধারাবাহিকভাবে সিরিয়া, ইরাক ও লেবাননে হামলা চালিয়ে হাজার হাজার নিরিহ মানুষকে হত্যা করেছে, যাদের মধ্যে ইরানের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম রাইসি এবং লেবাননের হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ অন্যতম। এ ছাড়াও ইরানের বিপ্লবী গার্ড, সামরিক-বেসামরিক নাগরিক, শিশুসহ অসংখ্য মানুষের ওপর নির্মম হামলা চালায় বর্বর ইসরায়েল বাহিনী। শুধু ২০২৪ সালেই সিরিয়া ও ইরাকে ইসরায়েলি ড্রোন ও বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা প্রায় ৩৭৮ জন।’
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা বারবার ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধ, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অবৈধ বসতি নির্মাণের নিন্দা জানালেও, কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গস্খহন করতে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। মুসলিম বিশ্বের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষায় গঠিত ওআইসি, আরবলীগসহ মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর নীরবতা ও উদাশিনতা দখলদার বাহিনীর প্রতি মৌনসম্মতির বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে, যা আগামীতে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় নতুন সংকট তৈরি করতে পারে।’
বিআলো/তুরাগ