এক অঞ্চলের ভাগ্য বদলে দেওয়া মানুষটি: মরহুম কাঞ্চন মুন্সী
সেতু আক্তার, ফরিদপুর: ফরিদপুর-১ আসনের সবচেয়ে দানশীল ও প্রজ্ঞাবান ব্যক্তিদের একজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন মরহুম কাঞ্চন মুন্সী। শিক্ষানুরাগী এই মানুষটি নিজের সারাজীবনের পরিশ্রমে অর্জিত শত শত কোটি টাকার সম্পদ নিঃসংকোচে ব্যয় করেছেন মানুষের কল্যাণে।
শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে তিনি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন, অসহায় মানুষের চিকিৎসার জন্য গড়ে তোলেন দাতব্য চিকিৎসালয়। কবরস্থান, ঈদগাহ, মসজিদ ও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে দান করেন বিপুল পরিমাণ জমি। তাঁর উদ্যোগে শত শত বেকার যুবক নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ পায়, বদলে যায় পুরো একটি অঞ্চলের জীবনমান।
কাঞ্চন মুন্সীর নিজ এলাকায় প্রতিষ্ঠিত কামারগ্রাম কাঞ্চন একাডেমী ছিল আলফাডাঙ্গা থানার প্রথম উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এলাকার অন্ধকার দূর করে শিক্ষার আলো জ্বালানোর পেছনে তাঁর ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য।
এ ধারাবাহিকতায় তাঁর উত্তরসূরি মরহুম মুন্সী বজলুর রহমানও দানের মহিমায় অনন্য ভূমিকা রাখেন। তিনি কাঞ্চন একাডেমীর জন্য ৯০ শতাংশ জমি দান করেন। সেই জমির ওপর ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় আলফাডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি)।
এই প্রকল্প আলফাডাঙ্গায় প্রতিষ্ঠার নেপথ্যে ছিলেন কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও কাঞ্চন মুন্সীর প্রপৌত্র জননেতা আরিফুর রহমান দোলন। তাঁর উদ্যোগ, প্রচেষ্টা ও আগ্রহের ফলেই এই অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি আধুনিক কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন সম্ভব হয়।
বর্তমানে আলফাডাঙ্গা টিটিসি স্থানীয় যুবকদের জন্য দক্ষতা উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকে চাকরি পাচ্ছেন, কেউ উদ্যোক্তা হয়ে নতুন ভবিষ্যৎ গড়ছেন। বাস্তব দক্ষতা শেখানোর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি এলাকার উন্নয়নে দৃশ্যমান মাইলফলক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মরহুম কাঞ্চন মুন্সী আজ আর জীবিত না থাকলেও তাঁর মানবসেবা, দানশীলতা এবং সামাজিক অবদান আজও মানুষের মুখে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে।
বিআলো/ইমরান



