এনামুল হক খান দ্বিতীয়বারের মতো বাজুস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত
বাংলাদেশ জুয়েলারি শিল্পে নতুন নেতৃত্বে আশার আলো
ইব্রাহীম হোসেন: ডায়মন্ড এন্ড ডিভাস-এর স্বত্বাধিকারী এনামুল হক খান দ্বিতীয়বারের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ঐতিহ্যবাহী পণ্যভিত্তিক বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস)-এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে। দেশের সকল জুয়েলারি ব্যবসায়ীর আস্থা ও ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, “বাজুস প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর তাঁর দক্ষতা ও নিষ্ঠা দিয়ে দেশ-বিদেশে বাজুসের সুনাম ছড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে বাজুস আজ প্রায় ৪০ হাজার সদস্যের একটি বৃহৎ পরিবারে পরিণত হয়েছে। তাঁর উন্নয়ন কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আমি সর্বোচ্চ নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করবো।”
আজ সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে বাজুসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল। বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিন রাসেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নির্বাচন বোর্ডের সদস্য এস. কে. মজিবুর রহমান ইকবাল ও মো. রকিবুল আলম দীপু, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গুলজার আহমেদ, নবনির্বাচিত সভাপতি এনামুল হক খান দোলন, সিনিয়র সহ-সভাপতি রনজিৎ ঘোষ, সহ-সভাপতি আজাদ আহমেদ, অভি রায় এবং ইকবাল হোসেন চৌধুরী জুয়েল।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বাজুসের সহ-সভাপতি এম. এ. হান্নান আজাদ ও কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন।
নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান নাসরিন ফাতেমা আউয়াল বলেন, “সবার সহযোগিতায় আমরা সফলভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে পেরেছি। আশা করছি নবনির্বাচিত কমিটি দেশের জুয়েলারি শিল্পের সমস্যা সমাধান ও আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের পরিচিতি বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখবে।”
ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট গুলজার আহমেদ বলেন, “জুয়েলারি শিল্পের উন্নয়নে সায়েম সোবহান আনভীরের উদ্যোগে দেশে অনেক জুয়েলারি ফ্যাক্টরি গড়ে উঠেছে। তাঁর নেতৃত্বে বাজুস একটি সুসংগঠিত ও বৃহৎ সংগঠনে রূপান্তরিত হয়েছে।”
নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্প আমাদের ঐতিহ্যের অংশ এবং এটি এখন অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ খাতে পরিণত হয়েছে। দেশে প্রায় ৪০ হাজার জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান ও ১০-১২ লাখ কারিগর এই শিল্পে কাজ করছেন। বার্ষিক সোনার চাহিদা সরকারি হিসাবে ৩০-৪০ টন এবং বেসরকারি হিসাবে ৭০-৯০ টন, যার বড় অংশ পুনর্ব্যবহৃত সোনা থেকে আসে। প্রায় ৪ লাখ কোটি টাকার সোনার বাজার ও ৩০ হাজার কোটি টাকার হীরার বাজার থাকা সত্ত্বেও উচ্চ কর-শুল্ক ও জটিল আমদানি প্রক্রিয়ার কারণে সরকারের রাজস্ব আয় প্রত্যাশিত নয়।”
তিনি আরও বলেন, “কাঁচামাল ও মেশিনারিজ আমদানিতে ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক উৎপাদন ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে, ফলে আধুনিক ফ্যাক্টরি স্থাপনও ধীরগতিতে এগোচ্ছে।”

নির্বাচিত পরিচালনা পরিষদের তালিকা (২০২৫-২০২৭)
প্রেসিডেন্ট: এনামুল হক খান (ডায়মন্ড এন্ড ডিভাস)
সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট: রনজিৎ ঘোষ (সানন্দা জুয়েলার্স প্রাঃ লি.)
ভাইস প্রেসিডেন্টগণ:
আজাদ আহমেদ (আপন ডায়মন্ড হাউজ)
অভি রায় (জড়োয়া হাউজ প্রাঃ লি.)
মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী (জেসিএক্স গোল্ড এন্ড ডায়মন্ড, সাবেক এফবিসিসিআই পরিচালক ও সার্ক চেম্বার পরিচালক)
কোষাধ্যক্ষ: অমিত ঘোষ
নির্বাচিত পরিচালক (২৯ জন):
মো. মিলন মিয়া, পবন কুমার আগরওয়াল, তানভীর রহমান, মো. লিটন হাওলাদার, কর্ণধার বাবলু দত্ত, গণেশ দেবনাথ, আশিস কুমার মণ্ডল, মিজানুর রহমান, বিকাশ ঘোষ, সুমন চন্দ্র দে, মোস্তফা কামাল, ধনঞ্জয় সাহা (বিপুল), শ্রীবাস রায়, মো. আলী হোসেন, মো. রুবেল, মো. নয়ন চৌধুরী, মো. ছালাম, ফাহাদ কামাল লিংকন, গৌতম ঘোষ, মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম, মো. তারেকুল ইসলাম চৌধুরী, আবু নাসের মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মো. রফিকুল ইসলাম, সৌমেন সাহা, আককাছ আলী, মোহাম্মদ মোরশেদ আলম, শাওন আহমেদ চৌধুরী, মো. নাজমুল হুদা লতিফ ও পলাশ কুমার সাহা।
প্রসঙ্গত, নতুন নেতৃত্বে বাজুসের এই কমিটি দেশের জুয়েলারি শিল্পে আধুনিকায়ন, আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।
বিআলো/তুরাগ



