ঐতিহ্যবাহী ছতুরা দরবার শরীফের ৬৮তম ইছালে সওয়াব মাহফিল সম্পন্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতীয় উপমহাদেশের বরেণ্য শিক্ষাবিদ ও ফুরফুরা সিলসিলার অন্যতম খলিফা, আধ্যাত্ম জগতের জ্যোতিষ্ক, হজরতুল্লামা শাহ সুফি অধ্যাপক আবদুল খালেক এম,এ (রহ.)’র ৬৮তম ইছালে ছাওয়াব মাহফিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ছতুরা দরবার শরীফের পীরজাদা আলহাজ্ব এয়ার কমোডর অব. জাহিদ কুদ্দুস (মা.জি.আ.)-র সভাপতিত্বে সম্পন্ন হয়। এতে ছতুরা দরবার শরীফের পক্ষ হতে অধ্যাপক (রহ.)-এর লিখিত গ্রন্থ সাইয়েদুল মুরছালিন ও সিরাজুস হালেকিনের আলোকে শরিয়ত ও তরিকৃতের দিক নির্দেশনামূলক সুদীর্ঘ আলোচনা করেন, পীরজাদা আলহাজ্ব সুফি আশেক হোসেন (মা.জি.আ.)। আলোচক ছিলেন, সোনাকান্দা দরবার শরীফের বর্তমান গদীনসিন পীর অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুর রহমান, ঢাকা মোহাম্মদপুর কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া কামিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মুফতি মুহাম্মাদ আবুল কাশেম ফজলুল হক, তরুণ আলেমেদ্বীন সৈয়দ হাসান আল-আযহারী, চট্টগ্রাম খতিবের হাট কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া মসজিদের খতিব হাফেজ ক্বারী মুফতি মুহাম্মাদ গোলাম কিবরিয়া প্রমুখ। বক্তারা বলেন, অধ্যাপক মাওলানা শাহ সুফি আলহাজ্ব আবদুল খালেক এম, এ (রহ.)- বাংলাদেশের একজন ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ। তিনি একাধারে শিক্ষকতা ও দক্ষ প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, ফেনী কলেজ, কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ, কলকাতা লেডি ব্র্যাবোর্ন কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা কলেজ এবং ইডেন কলেজ। তাছাড়া তিনি, পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান কর্তৃক ১৯৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত ইসলামি আইন পরিষদ বোর্ড ‘তালিমাত-ই-ইসলামীয়’ এর সদস্য এবং ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি- বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের তরিক্বতের খেদমতের আঞ্জাম দিয়েছেন। বিশ্বের বহু দেশে তার সিলসিলার কার্যক্রম এখনো চলমান। সাইয়েদুল মুরছালিন ও সিরাজুস ছালেকিন তার বিখ্যাত গ্রন্থ। কবি ফররুখ আহমদ ছিলেন, তার অনুরক্ত। অধ্যাপক সাহেবের ধর্মীয় চেতনায় এবং আধ্যাত্মিকতায় প্রভাবিত হয়ে কমরেড থেকে সুফিধ-ারাতে সংযুক্ত হয়েছিলেন। অনুষ্ঠান উপলক্ষে কর্মসূচির মধ্যে ছিল- খতমে কুরআন, হিফজ সমাপনী শিক্ষার্থীদের পাগড়ি পরিধান, জিয়ারত, বয়ান, তা’লীম, তসবিহ, তাহলিল, হামদ, নাত, জিকির-আজকার, মিলাদ-ক্বিয়াম ও তাবারুক বিতরণ। এ অনুষ্ঠানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য সমূহের মধ্যে যে জিনিসটি বেশি চোখে পড়ে তা হলো লক্ষাধিক মানুষের মাঝে নেই কোন শৃঙ্খলার অভাব। সবাই সারিবদ্ধভাবে বসে বা দাঁড়িয়ে খুবই চুপচাপভাবে ওয়াজ-নসিহত শ্রবণ করে থাকে এবং ছতুরা গ্রামের প্রতিটি ঘরে ঘরে আনন্দের আমেজ বয়ে যায়। প্রত্যেকের ছেলে-মেয়ে, নাতিনাতনি ও আত্মীয়স্বজন মাহফিল উপলক্ষে ছতুরা গ্রামে ছুটে আসেন এবং গ্রামের প্রতিটি ঘরে মাহফিলে আগত মেহমানদের স্বেচ্ছায় মেহমানদারি করান এবং গ্রামের প্রতিটি পরিবার ১০-২০ জন মেহমানদের মেহমানদারি এবং রাত্রিযাপনের ব্যবস্থা করেন।
বিআলো/তুরাগ