কক্সবাজারে সেন্টমার্টিনগামী ‘দি আটলান্টিক ক্রুজ’-এ অগ্নিকাণ্ড এক কর্মচারীর মৃত্যু, প্রাণে রক্ষা ১৯৪ পর্যটক
নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজারের নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ ‘দি আটলান্টিক ক্রুজ’-এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। তবে অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন জাহাজে ভ্রমণের অপেক্ষায় থাকা ১৯৪ জন পর্যটক।
নিহত ব্যক্তির নাম নুর কামাল (৩৫)। তিনি ‘দি আটলান্টিক ক্রুজ’-এর একজন কর্মচারী ছিলেন। অগ্নিকাণ্ডের সময় তিনি জাহাজের একটি কক্ষে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন বলে জানা গেছে।
আজ শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নুনিয়াছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট সংলগ্ন বাঁকখালী নদীতে নোঙর করা অবস্থায় জাহাজটিতে হঠাৎ আগুন লাগে। দীর্ঘ চেষ্টার পর বেলা ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। অগ্নি নির্বাপণে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট, কোস্টগার্ডসহ প্রশাসনের স্বেচ্ছাসেবক দল কাজ করে।
সী ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, চৌধুরী গ্রুপ অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড পরিচালিত ‘দি আটলান্টিক ক্রুজ’ জাহাজটি আজ সকালে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কথা ছিল। এ সময় জাহাজে ওঠার জন্য ১৯৪ জন পর্যটক ঘাটে অপেক্ষা করছিলেন, তবে সৌভাগ্যক্রমে আগুন লাগার সময় কেউ জাহাজে উঠেননি।
তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের একটি অংশকে ধারণক্ষমতা অনুযায়ী অন্য জাহাজে করে সেন্টমার্টিন পাঠানো হয়েছে। বাকিরা আগামীকাল যাত্রা করবেন।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক সৈয়দ মুহাম্মদ মোরশেদ হোসেন বলেন, জাহাজের এক কর্মচারীর সম্পূর্ণ ভস্মীভূত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি একটি কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। জাহাজে আর কেউ আছেন কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগুন লাগার কারণ এখনো নিশ্চিত নয়।
জাহাজটির এক যাত্রী মোহাম্মদ ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ভাগ্য ভালো ছিল, জাহাজে ওঠা হয়নি। নিজের চোখে আগুন জ্বলতে দেখেছি—খুব ভয়াবহ অভিজ্ঞতা।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে প্রাথমিকভাবে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রয়োজনে কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হবে। তিনি বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটি নাকি অন্য কোনো কারণে আগুন লেগেছে, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।
গত ১ নভেম্বর থেকে কক্সবাজার–সেন্টমার্টিন নৌপথে জাহাজ চলাচল শুরু হয়। সরকার ১ ডিসেম্বর থেকে রাত যাপনের অনুমতি দেয়। নির্ধারিত ১২টি নির্দেশনা মেনে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২ হাজার পর্যটক পরিবহনের জন্য ৬টি জাহাজকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বিআলো/এফএইচএস



