কদমতলীতে অপরাধচক্রে পুলিশের থাবা: অস্ত্র-মাদক মামলায় দুই সাজাপ্রাপ্ত আসামী গ্রেফতার
১৭ বছর ও ৩ বছরের সাজা; কদমতলীর রাজন-মাইনুদ্দিন অবশেষে ধরা
ইবনে ফরহাদ তুরাগ: রাজধানীর কদমতলী থানা এলাকা থেকে দুইজন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কদমতলী থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজনের বিরুদ্ধে রয়েছে ১৭ বছরের কারাদণ্ড এবং অন্যজনের বিরুদ্ধে রয়েছে তিন বছরের সশ্রম সাজা।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত এই অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন হয় ২৬ জুলাই শুক্রবার ভোরে। এলাকাবাসীর মতে, এরা দুজনই দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় অপরাধ জগতের প্রভাবশালী মুখ হিসেবে পরিচিত ছিল।
মোঃ রাজন, একজন ভয়ংকর অস্ত্র ব্যবসায়ী ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ২০১১ সালে দায়ের হওয়া একটি অস্ত্র মামলায় ২০১৮ সালে আদালত ১৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। কিন্তু রায় ঘোষণার আগেই রাজন আত্মগোপনে চলে যান।
কদমতলী থানা পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার ভোর ৪টায় কদমতলীর মুরাদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজনের রাজনৈতিক ছত্রছায়া ছিল এবং কিছু সামাজিক সংগঠনের সাথেও তার যোগাযোগ ছিল, যা তাকে এতদিন আইনের হাত থেকে দূরে থাকতে সহায়তা করেছে।
অন্যদিকে, মাইনুদ্দিন মোল্লা দীর্ঘদিন রহমতবাগ এলাকায় মাদকের ছায়া বিস্তার করে রেখেছিল। তার বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে একটি মাদক মামলায় রায় আসে ২০২০ সালে, যেখানে তাকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে তিনিও রায়ের পর থেকেই পলাতক ছিলেন। অবশেষে পুলিশ অভিযান চালিয়ে শুক্রবার সকাল ৫টা ৩০ মিনিটে রহমতবাগ থেকে তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশের ধারণা, মাইনুদ্দিন মাদকের মধ্যবর্তী পর্যায়ের একজন ‘লিঙ্ক পারসন’ হিসেবে কাজ করত, যার মাধ্যমে একটি চক্র সক্রিয় ছিল।
কদমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, এটি ছিল একটি পূর্ব পরিকল্পিত অভিযান। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ রাজন ও মাইনুদ্দিনকে আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাভোগ নিশ্চিত করা হবে।
আইনি বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশে সাজা ঘোষণার পরেও অনেক আসামি আত্মগোপনে চলে যায় এবং তাদের নজরদারিতে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগুলো অনেক সময় দুর্বল থাকে। এর ফলে সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা বছরের পর বছর ধরেই ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। এই দুই আসামির ক্ষেত্রেও সেই চিত্রই উঠে এসেছে।
এলাকাবাসী এই গ্রেফতারকে স্বাগত জানালেও তারা আরও তৎপরতা প্রত্যাশা করছেন। অনেকেই বলেন, শুধু রাজন বা মাইনুদ্দিন নয়, এ ধরনের অনেক অপরাধী এখনো এলাকায় সক্রিয় রয়েছে। কারও কারও অভিযোগ—স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাও এই অপরাধীদের গোপনে রক্ষা করে আসছিলেন। এই গ্রেফতার নিঃসন্দেহে একটি তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি।
অনুসন্ধান বলছে, কদমতলীতে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে ওঠা অপরাধচক্রের শিকড় এখনো অনেক গভীরে। শুধু অপরাধীদের গ্রেফতার নয়, তাদের পৃষ্ঠপোষকদেরও বিচারের আওতায় আনা ছাড়া এই চক্র নির্মূল হবে না।
বিআলো/নিউজ







 
                            
                         
                                                
                                                 
                                                
                                                 
                                                
                                                 
                                                
                                                 
                                                
                                                 
                                                
                                                
 
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                             
                                                
                                            
