• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    কমে যাচ্ছে বাবুই পাখি ও তালগাছ: প্রাকৃতিক আবাস সংকুচিত হওয়ায় বিপন্ন ‘তাঁতি পাখি’ 

     dailybangla 
    01st Dec 2025 2:16 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    নিজস্ব প্রতিবেদক: কবি রজনীকান্ত সেন তাঁর ‘স্বাধীনতার সুখ’ কবিতায় বাবুই পাখির কারিগরি দক্ষতার চিত্র তুলে ধরে লিখেছিলেন-বাবুই পাখিকে ডাকি বলিছে চড়াই, কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই।
    কবিতার এই লাইনগুলোতে যেমন সৃষ্টিশীলতার সৌন্দর্য ফুটে ওঠে, বাস্তবেও বাবুই পাখির নিখুঁত কারুকার্যে গড়া বাসা গ্রামবাংলার নৈসর্গিক রূপকে সমৃদ্ধ করে। তবে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো লালমনিরহাটেও এই পাখির সংখ্যা এখন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। একইভাবে কমেছে তালগাছ, যা বাবুই পাখির প্রধান আবাসস্থল।

    তাঁতি পাখি নামে পরিচিত বাবুই খড়কুটো বুনে ঝুলন্ত, নিরাপদ ও একাধিক কক্ষবিশিষ্ট বাসা তৈরি করে। বাসার প্রবেশপথ সুড়ঙ্গের মতো সরু ও বাঁকা থাকে, যাতে শিকারি পাখি বা প্রাণী প্রবেশ করতে না পারে। দেশে তিন প্রজাতির বাবুই দেখা যায়—দেশি, দাগি ও কালো বুক; এর মধ্যে দাগি ও কালো বুক এখন বিপন্ন বা বিলুপ্তপ্রায় অবস্থায় রয়েছে।

    বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইয়াসিন আলী মোল্লা (৭০) জানান, একসময় গ্রামাঞ্চলের তালগাছে সারি সারি বাবুই পাখির বাসা চোখে পড়তো। এখন আধুনিকতার প্রভাবে সেই তাল, নারিকেল বা সুপারি গাছ আর তেমন দেখা যায় না। ফলে বাবুই পাখির প্রাকৃতিক আবাস ধীরে ধীরে বিলীন হচ্ছে।

    দেউতির হাট দিমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরু উদ্দিন মাস্টার বলেন, বাবুই পাখি শান্ত ও নিরিবিলি জায়গায় উঁচু গাছে বাসা বানাতে পছন্দ করে। তাল, খেজুর, নারিকেল ও সুপারি তাদের প্রিয় গাছ। গাছের সংকট তৈরি হলে কখনো কখনো হিজল গাছেও বাসা বানাতে দেখা যায় বলে জানান তিনি।

    জেলা সামাজিক বনায়ন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান জানান, পরিবেশ বিপর্যয়, গাছপালা নিধন ও শিকারিদের ফাঁদের কারণে বাবুই পাখির বাসস্থান কমে গিয়েছিল। তবে সরকারি উদ্যোগে তাল ও নারিকেলসহ বিভিন্ন গাছ রোপণের পর এখন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বাবুই পাখির উপস্থিতিও আগের তুলনায় বেড়েছে।

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. সাইখুল আরিফিন জানান, সরকারের নির্দেশনায় গ্রামাঞ্চলের সড়কের দুই পাশে তালবীজ ও চারা রোপণ করা হচ্ছে। এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে পাখিসহ অন্যান্য জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সহায়ক হবে বলে আশা করছেন তিনি।

    প্রকাশিত গবেষণা ও পাখিবিষয়ক গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে—বাংলাদেশে বাবুই পাখির সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এই প্রজাতি আরও সংকটে পড়বে।
    তাদের মতে, বাবুই পাখির আবাসস্থল সংরক্ষণে স্থানীয় জনগণ, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। তাল, নারিকেল ও সুপারি গাছ সংরক্ষণ এবং টেকসই বনায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমেই এ পাখির নিরাপদ আবাস পুনর্গঠন সম্ভব।

    বাবুই পাখি শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়, গ্রামীণ পরিবেশের জীববৈচিত্র্যের মূল্যবান অংশ। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও সচেতনতার মাধ্যমে এই ‘তাঁতি পাখি’কে আবারও গ্রামবাংলার স্বাভাবিক দৃশ্যে ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

    বিআলো/এফএইচএস

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    December 2025
    M T W T F S S
    1234567
    891011121314
    15161718192021
    22232425262728
    293031