• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    কাল থেকে ঈদের ছুটি টানা ১০ দিন, ঈদ যাত্রায় রাজধানীর ৭টি মুখেই ভোগান্তি 

     dailybangla 
    04th Jun 2025 7:19 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    রতন বালো: উম্মতে মোহাম্মদির সেরা ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা। আগামী শনিবার ঈদ আনন্দে মাতবে ধর্মপ্রাণ মুসলমান। এখন সময় পরিবারের সঙ্গে মিলিত হবার। সেই তোড়জোড়ে শহরের কর্মব্যস্ত মানুষগুলো নাড়ির টানে এখন ঘরমুখী। বাস ট্রেন লঞ্চে এখন ঘরমুখো মানুষের ভীড়। কোথাও তিল ধরনের ঠাঁই নেই। শতকষ্ট স্বীকার করেও মানুষের কাফেলা এখন রেখে আসা স্বজনদের দিকে।

    আর মাত্র ২ দিন পরই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা। বাড়িতে ঈদ করতে কর্মস্থল ত্যাগের হিড়িক পড়েছে। কর্মব্যস্ত ইটপাথরের শহর ছেড়ে নাড়ির টানে গ্রামের বাড়ি ছুটছেন নগরবাসী। প্রতিবার ঈদে ঘরমুখো মানুষ যানজট, পরিবহন সঙ্কটসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হলেও এবারের চিত্র কিছুটা ভিন্ন। এবারের ঈদে টানা ১০ দিনের ছুটি শুরু হয়েছে আজ থেকে।

    ঈদের ছুটির প্রথমদিন যাত্রীদের চাপ বাড়লেও রেলস্টেশন থেকে নির্দিষ্ট সময়ে গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে ট্রেন। তবে ট্রেনের ভেতরে ও ছাদে রয়েছে ভিড়। বাস স্ট্যান্ডগুলোতেও যাত্রীদের চাপ থাকলেও নেই পরিবহন সংকট।

    এদিকে রাজধানীর মহাখালীর বাস টার্মিনালেও দেখা গেছে সেই চিত্র। যাত্রীর অপেক্ষায় কাউন্টারগুলোতে হাঁকডাক করছেন কাউন্টার মাস্টাররা। দূরপাল্লার বাসে ডেকে ডেকে যাত্রী নিতে দেখা গেছে। যাত্রীচাপ না থাকায় স্বস্তি নিয়ে ঢাকা ছাড়ছেন যাত্রীরা। পরিবহনগুলো বাড়তি ভাড়া নিলেও তা কেউ স্বীকার করছেন না।

    ভ্রাম্যমান আদালতের ভয়ে অনেকেই মুখ খুলতে নারাজ। তবে টিকিট কাটতে ও নির্ধারিত গাড়িতে উঠতে কিছুট ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা। অপরদিকে পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে সরকারি ছুটি দিনের অনেকেই অফিস হাজিরা দিয়েই নাড়ির টানে বাড়ির পথে ছুটছেন। দুপুরে পর থেকে যাত্রীদের কিছুটা চাপ গাবতলী বাস টার্মিনালে দেখা গেছে।

    নাড়ির টানে বাড়ি যেতে পরিবার পরিজন নিয়ে অনেককেই গাবতলী টার্মিনালে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। কারে হাতে অগ্রিম টিকিট, আবার কারো হাতে ব্যাগ কিংবা লাগেজ। অনেকের কোলে আদরের সন্তানটি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। কারো গন্তব্য দিনাজপুর, আবার কেউ যশোর, কেউ বগুড়া কিংবা বেনাপোল। ঈদ যাত্রাকে কেন্দ্রকরে সবার মুখে ছিল আনন্দের ছাপ।ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুরের বিভিন্ন পয়েন্টে ভিড় ক্রমান্নয়ে বাড়ছে। ফলে দেখা গেছে যানজট।

    এদিকে ছোট বড় যানবাহনের চাপ বাড়ছে পদ্মসেতুতেও। আর ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কও এখনও স্বাভাবিক। অন্যদিকে, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটে স্বাভাবিক দিনের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে যাত্রী ও পরিবহনের চাপ। তবে অন্যান্যবার এই ঘাটে দীর্ঘ যানজট দেখাগেলেও এবার সেই দৃশ্য আর চোখে পড়েনি।

    আসন্ন ঈদযাত্রায় রাজধানীতে প্রবেশ ও বের হওয়ার ৭ মুখেই যানজটের শঙ্কায় ভুগছে ঢাকাবাসী। শুধু রাজধানী থেকে বের হওয়াই নয়, প্রবেশের ক্ষেত্রেও যানজটের ধাক্কা সামাল দিতে হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পথে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। প্রবেশ এবং বের হওয়ার পথগুলো হচ্ছে গুলিস্তান-সায়েদাবাদ-যাত্রীবাড়ী, দোলাইপাড় মোড়-জুরাইরেলক্রসিং, বংশাল মোড়-বাবুবাজার ব্রিজ, গাবতলী মোড়-আমিনবাজার ব্রিজ,আব্দুল্লাপুর মোড়-কামারপাড়া, যাত্রাবাড়ী-ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার মোড় ওসাইনবোর্ড-কাঁচপুর ব্রিজ।

    এসব সড়ক দিয়ে রাজধানী থেকে বের হওয়া সর্বনিম্ন ২০ মিনিটের সময়ের মধ্যে লেগে যাচ্ছে কোন কোন সময় দেড় ঘণ্টা থেকে ২ ঘণ্টা পর্যন্ত। গুলিস্তান-সায়েদাবাদ-যাত্রীবাড়ীর দূরত্ব ২ কিলোমিটার পার হতে সময় লাগে ২০ থেকে ৩০ মিনিট। আর বর্তমানে সেখানে এক থেকে দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় যানজটে। ১০ মিনিটের সড়ক গাবতলী মোড়-আমিনবাজার ব্রিজ। সেখানে এইঅংশ পার হতে সময় লাগছে ১ ঘণ্টা। ৩ কিলোমিটার সড়ক যাত্রাবাড়ী-ডেমরা স্টাফকোয়ার্টার মোড় পর্যন্ত। সেখান থেকে বের হওয়া ও প্রবেশে সময় লাগার কথা ৩০মিনিট। সেখানে লেগে যাচ্ছে দেড় ঘণ্টা।

    এভাবেই রাজধানীবাসীদের ঢাকা থেকে বের হতেই দীর্ঘ সময় ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান। ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের যাত্রীরা রাজধানীতে প্রবেশ ও বের হয় গাবতলী, মহাখালী, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, পোস্তগোলা ও বাবুবাজার ব্রিজ দিয়ে।

    ঢাকা থেকে বের হওয়ার মুখেই যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে জুরাইন রেলগেট, বংশাল মোড় থেকে বাবুবাজার ব্রিজ পর্যন্ত ১-২ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে ঘরমুখো যাত্রীদের। এর মধ্যে জুরাইন রেলগেট এলাকায় রাস্তা দখল করে ফুটপাতের দোকান এলোমেলো ভাবে গাড়ি পার্কিং ও ট্রাফিকের অব্যবস্থাপনার কারণে প্রতিনিয়ত এই সড়কগুলোতে যানজট গেলে থাকতে দেখা গেছে।

    এদিকে রাজধানীর গুলিস্তানে সড়কের নিয়ন্ত্রণ কারো হাতে নেই। এই সড়কটি দখল হয়ে গেছে ফুটপাতের দোকান ও অবৈধ গাড়ি পার্কিংয়ে। দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ঈদযাত্রার যানজটের ভোগান্তি শুরু হয় গুলিস্তান থেকেই। এইমুখ দিয়ে ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক ও দক্ষিণাঞ্চলের নৌপথের যাত্রীরা যাতায়াত করে।

    রাজধানী থেকে বের হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ এই মুখে প্রতিদিন এক থেকে দেড় ঘণ্টা যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। ঈদের আগে তা আরও দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কা করেছেন সংশ্লিষ্টরা রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের প্রবেশ দ্বারগুলোতে মানুষজনকে অসহনীয় যানজটে দুর্ভোগ পোহাতে হওয়ার অভিযোগ স্বীকার করেন যাত্রী কল্যাণসমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

    তিনি জানান, এসব এলাকায় যানজট নিয়ন্ত্রণে রাস্তার মোড় পরিষ্কার রাখা ও ছোট যানবাহন বিশেষ করে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক প্রধান সড়কে চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় আজ বুধবার থেকে যানজটে যাত্রীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ঈদের আগেই রাজধানী ঢাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ার সড়কে যানজটে বেহাল অবস্থা তৈরি হয়েছে। রাস্তার পাশে অবৈধ স্থাপনা, ফুটপাতের দোকান, অবৈধ গাড়িপার্কিং, খানাখন্দ সড়ক ও নির্মাণাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের কারণে রাজধানীতে প্রবেশ মুখেই প্রতিনিয়ত প্রচণ্ড-যানজটে শিকার হতে হয় আন্তঃজেলা যানবাহনকে।
    অপরদিকে রাজধানীর স্বামীবাগ এলাকায় ট্রাকস্ট্যান্ড পাশের সড়কের অর্ধেক দখল করে পণ্যবাহী ট্রাক ও ঢাকা-নরসিংদী রুটের মেঘালয় পরিবহনের বাসগুলো রাখা হয়। একারণে সায়েদাবাদ রেলক্রসিং থেকে রাজধানীর সুপার মার্কেট পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটে আটকে থাকতে হয় যানবাহনকে।

    এছাড়া রাজধানী সুপার মার্কেটের সামনে দিয়ে উইটার্ন থাকায় প্রতিদিন আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা মার্কেটের সামনে আটকে থাকতে হয়। ঈদের সময় তা আরো বাড়বে বলে ঢাকার অভ্যন্তরীণ রুটের বাসচালকরা জানান। রাজধানীর সুপার মার্কেটের সামনে মো.আলম নামের ট্রান্স সিলভা পরিবহনের একচালক বলেন, পুলিশের লইগ্যা এহানে জ্যাম লাগে। মার্কেটের মোড়ে টার্ন নেয় গাড়িগুলো। পুলিশ টাকা খায়। এর লইগ্যা সায়েদবাদ জনপথ মোড় থেকে বলধাগার্ডেন পর্যন্ত জ্যাম লাইগ্যা থাকে। ঈদের সময় আরো খারাপ অইবো।

    তিনি জানান, এই যানজটের জন্য অনেকে সায়েদাবাদ না গিয়ে দয়াগঞ্জ হয়ে ধোলাইপাড় দিয়ে মাওয়া রুটে যাতায়াত করে। রাজধানী সুপার মার্কেটের যানজটের কারণে সায়েদাবাদ, দয়াগঞ্জ ও বলধা গার্ডেনের এই তিন সড়ক পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

    গত দুই দিন সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকার বেশিরভাগ সড়কের দুই পাশে অবৈধ গাড়ি পার্কিং ও ফুটপাতের দোকান বসানো হয়েছে। এছাড়া ট্রাফিক ব্যবস্থা ঠিক না থাকায় প্রতিদিন সায়েদাবাদ থেকে যাত্রাবাড়ী মোড় পর্যন্ত ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হয়। এছাড়া ইত্তেফাক মোড় থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যানজট ছড়িয়ে পড়ে।

    এছাড়া আরিচা ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটের যানবাহনগুলো গাবতলীর আমিনবাজার সেতু দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে। উত্তরাঞ্চলের যাত্রীরাও আমিনবাজার ব্রিজ দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে। ঈদের সময় গাড়ির চাপে গাবতলী থেকে আমিনবাজার সেতু ১ কিলোমিটার সড়কে দীর্ঘ যানজটে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় বলে যাত্রীরা জানান।

    ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও ঢাকা-জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কের যানবাহন গুলো টঙ্গী ব্রিজ দিয়ে রাজধানী থেকে বের হয়। এ পথে গাজীপুর থেকে উত্তরা বিমানবন্দর পর্যন্ত বাস র‌্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) নির্মাণ কাজে যানজটের ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। সরু রাস্তার কারণে আবদুল্লাহপুর থেকে আশুলিয়া বেড়িবাঁধ পর্যন্ত সড়কেও তীব্র যানজট সৃষ্টি হয় বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

    এ বিষয়ে জানার জন্য সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) মো.ইয়াসীন এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তিনি কোনো কথা বলেননি। তিনি পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলতে বলেন। তিনি জানান, বনানীর প্রধান কার্যালয়ে তৃতীয় তলায় একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, বিআরটিএ ও বিআরটিসির সমন্বয়ে।

    ঈদে যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরবচ্ছিন্ন করার জন্য এই নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়ে বলে জানান, সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. এহছানুল হক । পুলিশের লোকসহ সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাতে ঈদে যাতায়াতে সড়ক-মহাসড়কে কোনো সমস্যা না হয়। তবে অতীথ অভিজ্ঞতা বলছে বাড়ি যায়া মেন যুদ্ধের তেমনি ফেরার সময়ও একই যুদ্ধ করতে হবে।

    বিআলো/তুরাগ

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    August 2025
    M T W T F S S
     123
    45678910
    11121314151617
    18192021222324
    25262728293031