কিডনি প্যারেনকাইমা সেল রিপেয়ার: বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
ডা. রাইসুর আক্তার
1. Glomeruli
2. Tubulo-interstitial tissue (Renal Tubules)
এই দুই অংশে সেল ক্ষতিগ্রস্ত হলে রিজেনারেশন ও রিপেয়ার প্রক্রিয়া ভিন্ন ভিন্নভাবে সম্পন্ন হয়।
🔥 ১) রেনাল টিউবিউলার সেল কীভাবে রিপেয়ার হয়? (সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ)
কিডনির টিউবিউলার সেলগুলোর নিজস্ব রিজেনারেটিভ ক্ষমতা রয়েছে, যা লিভারের পর সবচেয়ে শক্তিশালী হিসেবে বিবেচিত। টিউবিউল ইনজুরির পর ধাপে ধাপে রিজেনারেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়—
#### 🔹 ধাপ–১: ডিডিফারেনশিয়েশন (Dedifferentiation)
ক্ষতিগ্রস্ত টিউবিউলার এপিথেলিয়াল সেলগুলো স্টেম-সদৃশ অবস্থায় ফিরে যায়। এ সময়ে তারা—
সেল ডিভিশনে সক্ষম হয়
ক্ষতস্থানের দিকে মাইগ্রেট করে
নতুন মাইক্রোটিউবিউল ও প্রোটিন তৈরি শুরু করে
এই সেলগুলোকে progenitor-like cells বলা হয়।
🔹 ধাপ–২: প্রোলিফারেশন (Proliferation)
ডিডিফারেনশিয়েটেড সেলগুলো দ্রুত বিভাজনের মাধ্যমে সংখ্যা বাড়ায়। এ প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করে—
* EGF (Epidermal Growth Factor)
* HGF (Hepatocyte Growth Factor)
* IGF-1
* FGF-2
* Wnt/β-catenin pathway
এর মাধ্যমে টিউবিউলের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে নতুন সেল প্রতিস্থাপিত হয়।
🔹 ধাপ–৩: মাইগ্রেশন (Migration)
নতুন সেলগুলো ক্ষতস্থানে গিয়ে—
* ফাঁকা অংশ পূরণ করে
* টিস্যু স্ক্যাফোল্ড মেরামত করে
* টিউবিউলার বেসমেন্ট মেমব্রেনের কোলাজেন স্ট্রাকচার পুনর্বিন্যাস করে
🔹 ধাপ–৪: রিডিফারেনশিয়েশন (Redifferentiation)
শেষ পর্যায়ে সেলগুলো পুনরায় স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা অর্জন করে—
* ব্রাশ বর্ডার গঠন করে
* প্রয়োজনীয় ট্রান্সপোর্টার তৈরি করে
* সোডিয়াম-পটাসিয়াম পাম্প পুনরুদ্ধার করে
ফলে স্বাভাবিক রেনাল ফাংশন ধীরে ধীরে ফিরে আসে।
👉 এই প্রক্রিয়ায় ৭–২১ দিনের মধ্যে প্রাথমিক উন্নতি দেখা যেতে পারে এবং ৬ মাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পুনরুদ্ধার সম্ভব।
### 🔥 ২) গ্লোমেরুলার সেল রিপেয়ার
গ্লোমেরুলাসে তিন ধরনের সেল থাকে—
1. Podocytes
2. Endothelial cells
3. Mesangial cells
⭐ Podocyte ক্ষতিগ্রস্ত হলেও পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা থাকে।
👉 এ কারণে অনেক ক্ষেত্রে Glomerular Parenchymal Diseaseসম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে রিভার্স হতে পারে।
🔥 ৩) ইন্টারস্টিশিয়াল ফাইব্রোসিস ও রিপেয়ার প্রসঙ্গ
কিডনিতে ফাইব্রোসিস বা স্কারিং তৈরি হলে—
* ECM deposition বৃদ্ধি পায়
* Myofibroblast proliferation হয়
* TGF-β pathway সক্রিয় হয়
* Nephron সংখ্যা কমে যায়
* কিডনির কার্যক্ষমতা স্থায়ীভাবে হ্রাস পেতে পারে
ফাইব্রোসিস কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণযোগ্য ও আংশিকভাবে রিভার্সিবল হতে পারে।
⭐ কোন অবস্থায় কিডনি প্যারেনকাইমা আগের মতো সুস্থ হতে পারে?
✔ ভালোভাবে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা (Reversible)
* Acute tubular injury
* Mild interstitial inflammation
* Fibrosis না থাকা
* Basement membrane অক্ষত থাকা
* Early stage nephropathy
* নিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস
* পর্যাপ্ত পানি পান
* দীর্ঘমেয়াদি নেফ্রোটক্সিক ওষুধ গ্রহণ না করা
❌ সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম (Irreversible)
* Glomerular sclerosis
* Cortical thinning
* উল্লেখযোগ্য fibrosis
* দীর্ঘমেয়াদি CKD (Stage 3b–5)
* বারবার সংক্রমণ
* Nephron mass উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়া
⭐ ৪) শরীর কীভাবে স্বাভাবিকভাবে রিজেনারেশনকে সহায়তা করে?
🔹 (A) Hypoxia-Induced Factors
মাইল্ড অক্সিজেন স্বল্পতায় →
HIF pathway সক্রিয় →
VEGF বৃদ্ধি →
নতুন microvasculature তৈরি →
টিস্যু রিকভারি ত্বরান্বিত হয়।
🔹 (B) Anti-inflammatory Cytokines
* IL-10
* নিয়ন্ত্রিত TGF-β signaling
* TNF-α হ্রাস
* Macrophage M2 activation
👉 Healing প্রক্রিয়া উন্নত হয়।
#### 🔹 (C) Tubular Stem/Progenitor Cell Recruitment
Renal papilla অঞ্চলে সীমিত resident stem cell থাকে, যা ইনজুরির সময় রিজেনারেশন প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে।
⭐ ৫) কোন বিষয়গুলো সেল রিপেয়ার ব্যাহত করে?
* উচ্চ রক্তচাপ
* অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস
* অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ
* ব্যথানাশক/NSAID এর অপব্যবহার
* বারবার ইউরিনারি ইনফেকশন
* ধূমপান
* Proteinuria
* নেফ্রোটক্সিক অ্যান্টিবায়োটিক
* দীর্ঘদিন পানিশূন্যতা
লেখক:
ডা. রাইসুর আক্তার
সিনিয়র কনসালটেন্ট ও রিসার্চার
যোগাযোগ:
📞 ০১৭৯৯৪৫৬৩৯৮
বিআলো/ইমরান



