বাগেরহাটে আসন কমানোর খসড়া বাতিলের দাবিতে লাগাতার বিক্ষোভ
সমাবেশে হুঁশিয়ারি: “প্রয়োজনে বাগেরহাটকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হবে”
এটি আমাদের দাবি নয়, এটি অধিকার। আমার, আমাদের অধিকার ফেরত চাই। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার ৬৩টি জেলাই অক্ষত আছে। শুধু আমরা বাগেরহাট আহত হয়েছি।
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাগেরহাটে একটি সংসদীয় আসন কমানোর প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির উদ্যোগে টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার সকাল ১১টা থেকে দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত শহরের দশানি ট্রাফিক মোড়ে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে অংশগ্রহণকারীদের উপস্থিতিতে বাগেরহাট-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে এবং সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট।
জানা যায়, সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন রামপাল ও মোংলা উপজেলা নিয়ে গঠিত বাগেরহাট-৩ আসন বিলুপ্ত করে ২ ও ৪ নম্বর আসনের সঙ্গে একীভূত করার খসড়া অনুমোদন দেয়। এর প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার থেকে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা একত্রিত হয়ে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি গঠন করেন এবং আন্দোলনের কর্মসূচি শুরু হয়।
রোববারের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম এ সালাম। তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যাব। প্রয়োজনে বাগেরহাটকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ডাক দিতেও পিছপা হব না।”
বাগেরহাট জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, “আমরা সময় দিচ্ছি। ১০ তারিখের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হব।”
সমাবেশে অংশ নিয়ে সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব ফরিদুল ইসলাম বলেন, “এটি আমাদের দাবি নয়, এটি অধিকার। দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৬৩টি অক্ষত থাকলেও কেবল বাগেরহাটই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা এখান থেকে পরিষ্কারভাবে জানাচ্ছি, আমাদের অধিকার ফেরত দেওয়া হোক।
আর আমাদের একটা দাবি আছে। বাংলাদেশে ৭২টি উপজেলা আছে, যেখানে ১টি মাত্র উপজেলা নিয়ে একটি নির্বাচনী (সংসদীয়) আসন। আমাদেরও এমন উপজেলা আছে, যার আয়তন এবং জনসংখ্যা সেসব উপজেলা থেকে বড় এবং বেশি। সুতরাং আমাদের দাবি, সদর উপজেলাকে ১টি আসন করে, বাকি ৮টি উপজেলাকে ৪টি আসন করতে হবে। দাবি একটাই, আসন ৪টি নয়, ৫টি চাই।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শামীমুর রহমান বলেন, “ইসিকে সরাসরি বলছি—খবরদার, আগুন নিয়ে খেলবেন না। বাগেরহাটবাসী এই প্রস্তাব মানবে না।”
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ টি এম আকরাম হোসেন, ফরিদুল ইসলাম, ওয়াহিদুজ্জামান দীপু, শেখ মুজিবুর রহমান, খাদেম নেয়ামুল ও খান মনিরুল ইসলাম।
সমাবেশ শেষে সর্বদলীয় কমিটির পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। আন্দোলনের ফলে সৃষ্ট যানজটে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
বিআলো/তুরাগ