‘গণতন্ত্রের মৃত্যু’: সেনাপ্রধানকে সর্বময় ক্ষমতা দেওয়ায় পাকিস্তানে বিতর্ক
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের পার্লামেন্ট বুধবার বিতর্কিত ২৭তম সংবিধান সংশোধনী বিল পাস করেছে, যার ফলে সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির এখন আরও ক্ষমতাধর হয়ে উঠবেন। বিলটি দুই-তৃতীয়াংশের বেশি ভোটে পাস হয়, মাত্র চারজন আইনপ্রণেতা এর বিরোধিতা করেন। প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের পর এটি আইনে পরিণত হবে।
নতুন সংশোধন অনুযায়ী, সেনাপ্রধান এখন পুরো প্রতিরক্ষা বাহিনীর- অর্থাৎ সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর- নেতৃত্ব দেবেন। তাঁর মেয়াদ শেষ হলেও পদমর্যাদা বহাল থাকবে এবং তিনি আজীবন আইনগত দায়মুক্তি পাবেন। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই পরিবর্তনকে “জাতীয় ঐক্যের পথে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
তবে বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এই পদক্ষেপকে “গণতন্ত্র হত্যার দলিল” বলে অভিহিত করেছে। তারা ভোটের আগে পার্লামেন্ট থেকে বের হয়ে গিয়ে বিলের কপি ছিঁড়ে প্রতিবাদ জানায়।
সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সংশোধন সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা সীমিত করে সরকারের প্রভাব বাড়াবে। নতুন ফেডারেল সাংবিধানিক আদালত এখন সংবিধানসংক্রান্ত মামলার রায় দেবে, যার বিচারক নিয়োগ করবে সরকার। সমালোচকেরা সতর্ক করেছেন, এতে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের ভিত্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সংবিধানবিদ আসাদ রহিম খান বলেন, “বিচারব্যবস্থার ওপর এমন আঘাত শতবর্ষে দেখা যায়নি।” অন্যদিকে আইনজীবী মির্জা মোইজ বেগের ভাষায়, “এই সংশোধনী স্বাধীন বিচারব্যবস্থার মৃত্যুঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে।”
সমালোচকেরা একবাক্যে বলছেন- যে শক্তি একসময় দেশের রাজনীতিকে ছায়া থেকে নিয়ন্ত্রণ করত, এখন তারা সংবিধানেই নিজের স্থান পাকাপোক্ত করে নিল। সূত্র: রয়টার্স
বিআলো/শিলি



