• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    গরিবের সবজিতে আগুন 

     dailybangla 
    08th Aug 2025 10:27 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    বিশেষ প্রতিনিধি: সবজির বাজার খুব বেশি চড়া, যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। বিশেষ করে গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সবজি কেনা কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে, যেসব সবজি সাধারণত গরিব মানুষেরা খেয়ে থাকেন, যেমন-আলু, বেগুন, পেঁপে ইত্যাদি, সেগুলোর দাম এতটাই বেড়েছে যে, তাদের পক্ষে কেনা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। এই কারণে, এই পরিস্থিতিকে ‘গরিবের সবজিতে আগুন’ বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন যাবৎ অব্যাহত বৃষ্টি বা বন্যার কারনে সবজির ক্ষেত নষ্ট করে দেয়। এর ফলে বাজারে সবজির সরবরাহ কমে যায় এবং দাম বেড়ে যায়। এছাড়াও, পরিবহন খরচ, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক কারণও সবজির দাম বাড়াতে পারে। এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে হলে, সরকারের উচিত সবজির বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা, যাতে গরিব মানুষও প্রয়োজনীয় সবজি কিনতে পারে।

    বৃষ্টিতে চড়া রাজধানীর সবজির বাজার: বৃষ্টি আর মৌসুম শেষের অজুহাতে বাজারে সব ধরনের সবজির দাম বাড়তি যাচ্ছে রাজধানীর বাজারে। যদিও এক মাসের বেশি সময় ধরে বাজারে বাড়তি দাম যাচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে আসছে সাধারণ ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, টানা কয়েকদিন ধরে বৃষ্টির কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ তুলনামূলক কম হওয়ায় দাম বাড়তি যাচ্ছে। তাছাড়া বেশ কিছু সবজি ইতোমধ্যে মৌসুম শেষ হওয়ার কারণেও দাম বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে গেছে। কাঁচা মরিচের কেজি ২৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। কাঁচা পেঁপের দামও বেড়ে গেছে। ক্রেতারা বলছেন, কী এমন হলো যে সবজির বাজারে আগুন লেগে গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, বর্ষায় সবজির ফলন কমে গেছে। এ জন্য দাম বেশি। ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে। এখনো বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে চাল।

    ইলিশের কেজি ২৪০০ টাকা : নাগালের বাইরে চলে গেছে ইলিশ মাছ। কেজি ২ হাজার ৪০০ টাকার কমে মিলছে না। সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দামও কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। বিভিন্ন বাজারে গতকাল ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকায় বিক্রি হয়। মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারের ব্রয়লার হাউসের স্বত্বাধিকারী শিবলী মাহমুদসহ অন্য বাজারের খুচরা বিক্রেতারা বলেন, ঈদের পর মুরগির চাহিদা কমে গেছে। তবে আগের মতোই দেশি মুরগি ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০, খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি ও ডিম ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা ডজনে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে আগের সপ্তাহে বেগুন কেজিপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল তা ১০০ থেকে ১৪০ টাকায় ঠেকেছে। টমেটো ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, ৫০ থেকে ৬০ টাকার করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকার কমে মিলছে না। ৬০ টাকার পটোল, ঝিঙে, ধুন্দুল, ঢ্যাঁড়শ ৮০ টাকায় ঠেকেছে। শসা ৫০ থেকে ১০০, কাঁচা মরিচ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ৭০ টাকার কচুমুখি ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, ৬০ টাকার কাঁকরোল ৮০ থেকে ১০০ টাকায়, ৩০ থেকে ৪০ টাকার কাঁচা পেঁপে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সব ধরনের শাকের দামও বেড়ে গেছে। পুঁইশাকের আঁটি ৪০ টাকায় ঠেকেছে।

    টাউন হল বাজারের সবজি বিক্রেতা সবুজ মিয়া বলেন, সবজির দাম বাড়ার কারণ হচ্ছে বর্ষাকাল। সরবরাহ কেমে গেছে। এ সময় সুলতানা বেগম নামে এক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এমন কী হলো যে বাজারে আগুন লেগে গেছে। চালের দামও বেড়ে গেছে। দেখার কেউ নেই।
    হাতিরপুল বাজারের মো. রফিকও বলেন, সবজির সরবরাহ কম। তাই দাম বাড়তি। বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, ২০ থেকে ২৫ টাকার আলুর কেজি ৩০ টাকায় ঠেকেছে। তবে আগের মতোই পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, দেশি আদা ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, আমদানি করা আদা ১৮০ থেকে ২০০, দেশি রসুন ১৪০ থেকে ১৬০, আমদানি করা রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
    অপরদিকে বর্ষা মৌসুম শুরু হলেও বাজারে নদীর মাছের সরবরাহ কম। বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে। কাজলি, ট্যাংরা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকার কমে মেলে না। তবে আকারভেদে চাষের রুই, কাতলা মাছের কেজি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০, চিংড়ি ৫০০ থেকে ৮০০, তেলাপিয়া ও পাঙাশ ২২০ এবং কাঁচকি মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
    মৌসুম শুরু হলেও বাজারে ইলিশ অতি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। দাম একেবারে নাগালের বাইরে চলে গেছে। ওজনে ১ কেজি হলে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশও ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। জাতীয় মাছটি একেবারে মধ্যবিত্তের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। হাতিরপুল বাজারের মাছ বিক্রেতা করিম শেখ বলেন, মৌসুম শুরু হয়েছে। তবে নদীতে আগের মতো ইলিশ পাওয়া যায় না। এ জন্য দাম বেশি।

    চড়া দামেই চাল বিক্রি : বোরো ধান উঠার শুরুতে চালের দাম কিছুটা কমলেও ঈদের পর মিনিকেট ও আটাশ চালের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যায়। মনজুর, রশিদ, সাগরসহ অন্যান্য কোম্পানির মিনিকেট চালের দাম বেড়ে ৮০ টাকায় কেজি ঠেকেছে। ডায়মন্ড, হরিণ, মোজাম্মেল কোম্পানির চাল আরও বেশি দামে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আটাশ চালের দামও বেড়ে ৬২ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মোটা চাল আগের মতোই ৫২ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটে শওকত রাইস স্টোরের মো. শওকত আলীসহ অন্য খুচরা চাল বিক্রেতারা বলেন, ‘ঈদের পর মিলমালিকরা চিকন চালের দাম বস্তায় ৩০০ টাকা বাড়িয়েছেন। এ জন্য আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
    এদিকে আমাদের বগুড়া প্রতিনিধি জানান, বগুড়ার বাজারগুলোতে আগাম শীতের সবজি আমদানি হলেও কমছে না দাম। ফলে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষ। গত কয়েকদিন আগে লাগাতার বৃষ্টি ও বন্যার কারণে ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় প্রভাব পড়েছে কাঁচা বাজারে। প্রতিটি সবজির দাম বেড়ে ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
    শুক্রবার বগুড়ার রাজাবাজার, ফতেহ আলী বাজারসহ শহরের বেশকিছু বাজার ঘুরে দেখা যায়, আলু মান ভেদে ৫৫ টাকা কেজি, বেগুন ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি, কাঁচা মরিচ ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি, করলা ১০০ টাকা, ফুলকপি ১২০ টাকা, বাধাকপি ৪০ থেকে ৫০টা প্রতি পিস, বরবটি ১০০ টাকা, ঝিংগা ৭০ থেকে ৮০, পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১২০, ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০, আদা ২৮০, রসনু ২৪০, পটল ৬০, চিচিংগা ৬০ এবং শশা ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মিষ্টি লাউ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, কচুর বই ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেরস ৮০ টাকা, মূলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। চালের বাজারে আগের দামেই বেচাকেনা হতে দেখা যায়। বিআর-২৮ চাল মানভেদে ৫৪ থেকে ৫৮, রঞ্জিত ৫৬ থেকে ৫৮, কাটারিভোগ ৬৮-৭০, মিনিকেট ৭০ এবং নাজিরশাইল চাল প্রতিকেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে ব্রয়লার মুরগি বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে ডিম প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা।
    বগুড়ার সবচেয়ে বড় মোকাম মহাস্থান হাট ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারে প্রতি মণ মূলা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা, করলা ৩ হাজার ২০০ টাকা, বেগুন ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা ও পটল ২ হাজার ২০০ টাকা প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে।
    ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে শীতের আগাম সবজি আসতে শুরু করলেও দাম বেশি। দুই-চার দিনের মধ্যে দাম কমতে পারে। গত কয়েকদিন আগে লাগাতার বৃষ্টি ও বন্যার প্রভাবে সবজির দাম বেড়ে দ্বিগুণে দাঁড়ায়। সেই সময় বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে মাঠ থেকে সবজি সংগ্রহ করতে না পারায় বাজারে সরবরাহ কমে গিয়েছিল।
    বগুড়া সদরের পীরগাছা এলাকার কৃষক মজিবর রহমান জানান, গত কয়েকদিন আগে বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। জমিতে কাঁদা পানি জমে যাওয়ায় সবজি সংগ্রহ করা যাচ্ছে না। এ কারণে বাজারে সবজির দাম বাড়তি।

    বিআলো/ইমরান

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    August 2025
    M T W T F S S
     123
    45678910
    11121314151617
    18192021222324
    25262728293031