গলাচিপায় ছয় মাস ধরে বিচারক শূন্য: বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি চরমে
মু. জিল্লুর রহমান জুয়েল, গলাচিপা (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর গলাচিপা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দীর্ঘ ছয় মাস ধরে বিচারক না থাকায় বিচারপ্রার্থীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে গলাচিপা ও আশপাশের বিচ্ছিন্ন এলাকা রাঙ্গাবালী এবং দশমিনার সাধারণ মানুষ মামলার কার্যক্রম পরিচালনায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
জানা গেছে, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাস থেকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পদটি শূন্য রয়েছে। ফলে গলাচিপা, রাঙ্গাবালী ও দশমিনার প্রায় ৩০ হাজার বিচারপ্রার্থীকে মামলার শুনানির জন্য পটুয়াখালী জেলা আদালতে যেতে হচ্ছে। এতে করে সময়, অর্থ এবং শারীরিক শ্রমের পাশাপাশি দুর্বল আর্থিক সক্ষমতার মানুষদের দুর্দশা বেড়ে গেছে বহুগুণে।
রাঙ্গাবালী থেকে আগত এক বিচারপ্রার্থী বলেন, “গরিব মানুষ, অনেক কষ্ট করে গলাচিপায় মামলা করেছিলাম। এখন বিচার পাচ্ছি না, উল্টো কয়েক দফা পটুয়াখালী যাওয়া-আসায় সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছি।”
এদিকে বিচারক না থাকায় আদালতপাড়ার পরিবেশও থমকে গেছে। আইনজীবী, বিচারপ্রার্থী ও আদালত সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় চায়ের দোকানগুলোতেও নেমে এসেছে নিস্তব্ধতা।
বকুলবাড়িয়া ইউনিয়ন থেকে আগত এক নারী বিচারপ্রার্থী বলেন, “গলাচিপায় আগে কোর্টে নিয়মিত যেতাম, এখন নদী পেরিয়ে পটুয়াখালী যেতে হয়। শুধু ভাড়াই নয়, শারীরিক কষ্টও বাড়ছে। শুনি কবে বিচারক আসবেন, তাও নিশ্চিত না।”
এ বিষয়ে গলাচিপা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘদিন বিচারক না থাকায় হাজার হাজার মামলা ঝুলে আছে। আমরা জেলা বারের সভাপতির মাধ্যমে বিষয়টি বারবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে এনেছি। আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, নতুন বিচারক নিয়োগ চূড়ান্ত হলে গলাচিপাতেও ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি মামলা আটকে আছে। দ্রুত বিচারক নিয়োগ না হলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
স্থানীয়দের দাবি, বিচার ব্যবস্থাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে দ্রুত গলাচিপায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদে বিচারক নিয়োগ দেওয়া হোক।
বিআলো/সবুজ