গাজায় নতুন হামলায় নিহত চার, চুক্তি ভাঙার শঙ্কা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় আবারও বিমান হামলা ও গুলিবর্ষণ চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। এতে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেই এই হামলা নতুন করে চুক্তি ভঙ্গের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। সূত্র: আল জাজিরা
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা সিটির পূর্বাঞ্চলের আল-শাআফ এলাকায় দুটি পৃথক হামলায় চারজন নিহত হন। ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স জানায়, নিহতরা নিজেদের ধ্বংসস্তূপে পরিণত বাড়িঘর দেখতে ফিরে এসেছিলেন। সে সময় ইসরাইলি সেনারা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
তবে ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা গুলি চালিয়েছে এমন কিছু যোদ্ধার দিকে, যারা ‘হলুদ সীমারেখা’ অতিক্রম করে শুজাইয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। সেনাদের মতে, ওই যোদ্ধারা তাদের জন্য ‘হুমকি’ তৈরি করেছিল।
উল্লেখ্য, গত ৪ অক্টোবর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রকাশিত মানচিত্রে এই ‘হলুদ রেখা’ নির্ধারণ করা হয়। যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে ওই রেখার পেছনে ইসরাইলি সেনারা অবস্থান করছে।
তবে স্থানীয়রা বলছেন, রেখাটির অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। গাজার তুফাহ এলাকার বাসিন্দা সামির বলেন, “পুরো এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা মানচিত্র দেখেছি, কিন্তু বুঝতে পারছি না সীমারেখা আসলে কোথায়।”
যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত ১০ অক্টোবর কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর থেকে গাজায় একাধিকবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। গাজা কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত অন্তত ৯৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গত রোববার ইসরাইলি বিমান হামলায় আরও ৪২ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। ইসরাইল দাবি করেছে, ওই হামলা ছিল রাফা এলাকায় দুই সেনা হত্যার প্রতিশোধ। তবে হামাস এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, রাফার ইসরাইলি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় তাদের কোনো ইউনিট সক্রিয় নেই।
হামাসের এক কর্মকর্তা অভিযোগ করেন, “ইসরাইল পুনরায় যুদ্ধ শুরু করার অজুহাত তৈরি করছে।” সংগঠনটি জানায়, তারা এখন পর্যন্ত ২০ জন জীবিত ইসরাইলি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে এবং বাকিদের মৃতদেহ হস্তান্তরের চেষ্টা করছে। তবে গাজার ধ্বংসযজ্ঞের কারণে এই প্রক্রিয়া জটিল হয়ে পড়েছে।
এদিকে, ইসরাইল গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানো বন্ধের হুমকি দিলেও পরে জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি এখনো কার্যকর রয়েছে। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক জানান, গাজায় সহায়তা পাঠানো পুনরায় শুরু হয়েছে, তবে সহায়তার পরিমাণ এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।
বিআলো/শিলি



