গাজা যুদ্ধবিরতি অনিশ্চিত: সব মৃত বন্দির দেহ ফেরত চায় ইসরায়েল
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: গাজায় যুদ্ধবিরতির ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন হামাসের বিরুদ্ধে একটি “সমগ্র সামরিক পরিকল্পনা” প্রস্তুত করতে- যদি বর্তমান যুদ্ধবিরতি ভেঙে যায়।
এরই মধ্যে হামাস আরও দুই ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ ফেরত দিয়েছে। তবে সংগঠনটি জানিয়েছে, গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা বাকি দেহগুলো উদ্ধার করতে বিশেষ সরঞ্জাম ও বাইরের সহায়তা প্রয়োজন।
পশ্চিম তীরে অভিযান ও গ্রেপ্তার-
ওয়াফা নিউজ এজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ভোরে ইসরায়েলি বাহিনী নাবলুস ও কালকিলিয়া শহরে একাধিক অভিযান চালায়। নাবলুসের টিউনিস সড়কে মুরাদ ইমাদ আল-দিন দারওয়াজা এবং কালকিলিয়ার কফর সাবা এলাকায় বাহজাত ইয়ামিন, বারাআ হাম্মাদ ও মুয়াতাসেম আল-বাজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ ছাড়া, ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থা (পিএলও)-এর অধীনস্থ উপনিবেশ ও প্রাচীর প্রতিরোধ কমিশনের (CWRC) পরিচালক মুরাদ শতাইউইকেও গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সংস্থাটি পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের বেআইনি বসতি স্থাপনের তথ্য নথিবদ্ধ করে থাকে।
দুই ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ ফেরত-
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, গাজা থেকে ফেরত পাওয়া দুই মরদেহের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে—তারা হলেন ইনবার হায়মান (২৭) ও সৈনিক মোহাম্মদ এল-আত্রাশ (৩৯)। হায়মান নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যালে ৭ অক্টোবর নিহত হন এবং এল-আত্রাশ একই দিনে যুদ্ধে প্রাণ হারান। সেনাবাহিনীর মতে, “হামাসকে চুক্তি অনুযায়ী সব মৃত বন্দির মরদেহ ফেরত দিতে হবে।”
গাজায় বেসামরিক হতাহতের অভিযোগ-
ইসরায়েলি অধিকার সংস্থা ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির পরও গাজায় “নো-গো জোন” অতিক্রম করায় সাধারণ নাগরিকদের গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। সংস্থাটির বক্তব্য, “এই রেখা কেবল মানচিত্রে আছে, বাস্তবে নয়। যে কেউ সেটি অতিক্রম করলেই মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়ছে।”
ইসরায়েলি সেনাপ্রধানের স্বীকারোক্তি-
হামাসের হামলার দুই বছর পূর্তিতে সেনাপ্রধান এয়াল জামির বলেছেন, “২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সেনাবাহিনী দেশ ও নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছিল। এখন আমাদের দায়িত্ব সেই ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া।”
চিকিৎসা সংকটে গাজা-
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় এখনো তীব্র ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রীর ঘাটতি রয়েছে। অপুষ্টিতে ভোগা শিশুরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়ছে। অনেককে জীবন বাঁচাতে গাজার বাইরে পাঠাতে হচ্ছে।
সাংবাদিক আটক নিয়ে ক্ষোভ-
তিন মার্কিন সাংবাদিককে আটক ও নির্যাতনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর কাছে একটি যৌথ প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছে ১০টি সংবাদমাধ্যম অধিকার সংগঠন।
তারা বলেছে, “যুক্তরাষ্ট্র সরকার এখনো কোনো প্রকাশ্য নিন্দা জানায়নি, যা হতাশাজনক।”
জার্মানির প্রতি আহ্বান-
ইসরায়েলের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্যারন হাসকেল আশা প্রকাশ করেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতির পর জার্মানি যেন ইসরায়েলের ওপর অস্ত্র রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় এবং দেশটির ভ্রমণ সতর্কতা বাতিল করে।
উল্লেখ্য, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ আগস্টে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৬৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির মৃত্যুর পর ওই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। সূত্র: আল জাজিরা
বিআলো/শিলি