চিপসের প্যাকেটে ‘খেলনা টাকা’! মুদ্রা আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন, আইনজীবীদের সতর্কবার্তা
মো. তরিকুল ইসলাম (মোস্তফা),বাউফল (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার হাই স্কুল রোডের স্থানীয় বাজারে বিক্রি হওয়া ‘নূর প্রোডাক্ট’ নামের এক কোম্পানির চিপসের প্যাকেটে পাওয়া গেছে বাংলাদেশের ৫০০ ও ১০০০ টাকার মতো দেখতে “খেলনা টাকা”। আকৃতি, রঙ ও নকশায় এগুলো আসল টাকার প্রায় হুবহু অনুরূপ হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় দোকানদার ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিশুদের কাছে এসব চিপস জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। শিশুরা টাকার মতো কিছু পাওয়ার আশায় আগ্রহভরে এসব চিপস কিনছে এবং প্রতিটি প্যাকেটে ভাঁজ করা নোটের মতো কাগজ রাখা হচ্ছে, যার গায়ে ছোট করে লেখা রয়েছে “খেলনা টাকা”। তবে, বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে যেখানে শিশুরা এই খেলনা টাকা নিয়ে দোকানে গিয়ে আসল টাকা হিসেবে সেটি ব্যবহার করতে চেয়েছে, ফলে বিপত্তি তৈরি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, শিশুদের মধ্যে ভুল ধারণা তৈরি হওয়ায় অনেক সময় স্কুলের সামনে বা রাস্তায় এই খেলনা টাকাগুলো পড়ে থাকতে দেখা যায়। পথচারীরা এগুলো আসল টাকা ভেবে কুড়িয়ে নেয় এবং পরে বুঝতে পারে যে এটি আসলে খেলনা। এই ঘটনার ফলে শিশুদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং সমাজে নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়া টাকার নকশার অনুরূপ কোনো বস্তু তৈরি বা বাজারজাত করা ‘মুদ্রা অনুকরণ’ (Currency Imitation) হিসেবে দণ্ডনীয় অপরাধ। বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ধারা ৪৮৯এ থেকে ৪৮৯ই অনুযায়ী, জাল বা অনুরূপ নোট তৈরি ও প্রচারের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
এছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৭ সালের এক বিজ্ঞপ্তিতে (BRPD Circular No. 04/2017) স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে, টাকার অনুরূপ কোনো নকশা বিজ্ঞাপন, প্যাকেজিং বা প্রচারে ব্যবহার করা যাবে না।
এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহল দাবি জানিয়েছে যে, প্রশাসন উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে এই ধরনের পণ্য বাজার থেকে সরিয়ে ফেলা এবং শিশুদের ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
বিআলো/ইমরান



