ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়াতে ছাত্রদল নেতার গুলি, নিহত ব্যবসায়ী
নিজস্ব প্রতিবেদক: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে ছাড়াতে গিয়ে গুলি ছোড়েন ছাত্রদল নেতা। সেই গুলিতে নিহত হয়েছেন মামুন ভূঁইয়া নামে এক ব্যবসায়ী।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার (১০ জুন) রাতে। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত মামুন ভূঁইয়া রূপগঞ্জের ভুলতা মাঝিপাড়া এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে। তিনি এলপিজি গ্যাস ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে পুলিশ আটক করলে তাকে ছাড়াতে যায় একদল লোক। এ সময় ছাত্রদল নেতা পরিচয়ে এক ব্যক্তি এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে। গুলিবিদ্ধ হন মামুন ভূঁইয়া।
স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সশস্ত্রভাবে এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি দেখানোর ঘটনা নতুন নয়। তবে এবার এক নিরীহ ব্যবসায়ী প্রাণ হারানোয় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে।
আর অভিযুক্ত ওই ছাত্রদল নেতার নাম জাইদুল ইসলাম বাবু। তিনি জেলা ছাত্রদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক। এছাড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমানের ভাতিজা।
এদিকে ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন খোকা ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
স্থানীয়রা জানান, ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন খোকাকে মাঝিপাড়া এলাকায় দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী তাকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। এদিকে তাকে আটকে রাখার খবর পেয়ে দলবল নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ছাত্রদল নেতা জাইদুল ইসলাম বাবু। এসময় তিনি খোকাকে ছাড়িয়ে নিতে জনতার দিকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন।
এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন মামুন ভূঁইয়া। তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন খোকা ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর গা ঢাকা দেন। পরে গতকাল বিকেলে তাকে এলাকায় দেখা গেলে ভুলতা ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক বাদলসহ এলাকাবাসী তাকে আটক করেন। এই খবর পেয়ে ছাত্রদল নেতা জাইদুল তাকে ছাড়িয়ে নিতে পিস্তল দিয়ে গুলিবর্ষণ করেন। এতে গুলিবিদ্ধ হন মামুন।
ওসি আরও বলেন, মামুনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাত ৯টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এদিকে গুলিবর্ষণের পর এলাকাবাসী ধাওয়া দিলে পালিয়ে যান ছাত্রদল নেতা বাবু। এরপর উত্তেজিত জনতা ছাত্রলীগ নেতা খোকাকে গণপিটুনি দিয়ে রূপগঞ্জ থানায় সোপর্দ করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং জড়িতদের শনাক্তে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে রাতেই নিহতের বড় ভাই বাদল ১৬ জনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন।
বিআলো/সবুজ