জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় নীতি ও আইনী কাঠামো সংস্কারের দাবি নাগরিক সমাজ
বিশেষ প্রতিনিধি: বাংলাদেশে খাদ্য সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বিদ্যমান নীতি ও আইনী কাঠামো সংস্কার জরুরি বলে অভিমত দিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তাদের মতে, খাদ্য অধিকারকে বাণিজ্যিক অধিকারের চেয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে টেকসই কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।
বুধবার রাজধানীর একেএম মুশতাক আলী মিলনায়তনে সাউথ এশিয়ান অ্যালায়েন্স ফর প্রোভার্টি ইরিডিকেশন (স্যাপি) ও ইনসিডিন বাংলাদেশ আয়োজিত “মিট দ্যা প্রেস” অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনসিডিন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক একেএম মাসুদ আলী। আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি এস এম বদরুল আলম, সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান, ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের সহ-সভাপতি খান মো. রুস্তম আলী, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, ইনসিডিন বাংলাদেশের অপারেশন চীফ মুশফিকুর রহমান, পলিসি এন্ড লিগ্যাল সার্পোট স্পেশালিস্ট মো. রফিকুল আলম এবং আদিবাসী নেত্রী কল্যাণী চাকমা।
মূল প্রবন্ধে একেএম মাসুদ আলী বলেন, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক, ভূমিহীন জনগোষ্ঠী, নারী ও আদিবাসীদের খাদ্য অধিকার নিশ্চিত করতে ভূমি সংস্কার, বিনামূল্যে বীজ প্রাপ্তি, জলের উৎসকে জনগণের সাধারণ সম্পদ হিসেবে সংরক্ষণ এবং জিন পরিবর্তিত শস্য প্রতিরোধকে গুরুত্ব দিতে হবে। একইসাথে, জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনায় ক্ষুদ্র কৃষকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
কৃষকনেতা এস এম বদরুল আলম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়েছে। নদী ভাঙন, খরা, আকস্মিক বন্যা, দক্ষিণাঞ্চলে লবণাক্ততার বিস্তারসহ নানা কারণে কৃষকরা জমি হারাচ্ছে। অনেকেই জীবিকার সন্ধানে শহরমুখী হয়ে মানবেতর জীবন-যাপনে বাধ্য হচ্ছে। বহুজাতিক কোম্পানির কৃষি উপকরণের উপর নিয়ন্ত্রণ, সার-বীজ বাজারে সিন্ডিকেট ও কর্পোরেট আধিপত্য কৃষিকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা জানান, ৮টি কৃষক-শ্রমিক সংগঠন, ৩টি আদিবাসী সংগঠন এবং ২১টি সুশীল সমাজের সংগঠনের মতামতের ভিত্তিতে এই সুপারিশমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। বক্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান— খাদ্য সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দ্রুত নীতি ও আইনী কাঠামোর সংস্কার এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে।
বিআলো/তুরাগ