জলবায়ু পরিবর্তন ও স্বাস্থ্য অধিকার নিয়ে চাঁদপুরে তরুণদের চিত্রাঙ্কন উৎসব
সাইদ হোসেন অপু চৌধুরী, চাঁদপুর: জলবায়ু পরিবর্তন ও যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার (এসআরএইচআর) বিষয়ে তরুণদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাঁদপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে জেলা পর্যায়ের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দিনব্যাপী শহরের রেডচিলি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সিরাক-বাংলাদেশের ‘ইয়ুথ ক্যাটালিস্ট’ প্রকল্পের আয়োজনে এ প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুর জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবুল কাশেম মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন সিরাক-বাংলাদেশের অ্যাডভোকেসি স্পেশালিস্ট মিজানুর রহমান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ নূর আলম দ্বীন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাসিমা আক্তার এবং মাতৃপীঠ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল রাজ্জাক।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় সেশনভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন সিরাক-বাংলাদেশের নেটওয়ার্ক অফিসার মো. কামরান মিয়া এবং ফাইন্যান্স ও অ্যাডমিন অফিসার রাবেয়া আক্তার মুনমুন।
ইউএনএফপিএ বাংলাদেশ ও সুইডিশ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা সিডা’র অর্থায়নে দেশের বিভাগীয় শহর ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলোতে ‘ইয়ুথ ক্যাটালিস্ট’ প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থল চাঁদপুর বাংলাদেশের অন্যতম জলবায়ু-সংবেদনশীল জেলা। প্রতি বছর নদীভাঙন, বন্যা ও ভৌগোলিক পরিবর্তনের কারণে বহু পরিবার বাস্তুচ্যুত হয়। এসব প্রাকৃতিক বিপর্যয় স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোতে, বিশেষ করে নারী ও কিশোরীদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবায়, নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে তরুণদের সৃজনশীলতার মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি ও নীতিনির্ধারকদের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়াই ছিল প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য।
সভাপতির বক্তব্যে আবুল কাশেম মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, “চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মূল থিম জলবায়ু ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা। তরুণরা তাদের ভাবনা ছবির মাধ্যমে প্রকাশ করছে- এটাই এর সবচেয়ে বড় সাফল্য। আমরা চাই, এসব বার্তা নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে প্রতিফলিত হোক।”
প্রতিযোগিতায় ১৪ থেকে ২০ বছর বয়সী স্কুল ও কলেজের ৩৫ জন তরুণ শিল্পী অংশগ্রহণ করেন। তারা চিত্রকর্মের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, নদীভাঙনের ফলে স্থানচ্যুতি, স্বাস্থ্যসেবার সীমাবদ্ধতা, মাতৃস্বাস্থ্য, মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক বৈষম্য তুলে ধরেন। প্রতিটি চিত্রের সঙ্গে শিল্পীর চিন্তা, অভিজ্ঞতা ও আহ্বান সংবলিত সংক্ষিপ্ত (৫০–১০০ শব্দের) বার্তা যুক্ত ছিল।
ডিজিএফপি, ডিজিএইচএস, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত বিচারকমণ্ডলী সৃজনশীলতা, প্রাসঙ্গিকতা ও বার্তার শক্তি অনুযায়ী সেরা শিল্পকর্মগুলো নির্বাচন করেন। স্কুল ও কলেজ বিভাগ থেকে শীর্ষ ১০ জন বিজয়ীকে পুরস্কৃত করা হয়।
উল্লেখ্য, ‘ইয়ুথ ক্যাটালিস্ট’ প্রকল্প তরুণদের সামাজিক ও পরিবেশগত পরিবর্তনের অগ্রদূত হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে, যাতে তারা সৃজনশীলতা ও সচেতনতার মাধ্যমে একটি সহনশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায্য ভবিষ্যৎ নির্মাণে অবদান রাখতে পারে।
বিআলো/শিলি



