• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    জিয়া ছিলেন বিশ্বনেতা: মাহবুব নাহিদ 

     dailybangla 
    08th Oct 2024 6:58 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য পরিচিতি অর্জন করেছে। তাঁর দূরদর্শী দৃষ্টিভঙ্গি এবং নীতিগত দৃঢ়তায় দেশের পররাষ্ট্রনীতিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছিল। “সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারোর সঙ্গে শত্রুতা নয়”—এই মূলমন্ত্রে তিনি কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠন করেন, যা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতার প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিল। তাঁর সময়ে, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের পরিসর বিস্তৃত হয়ে ওঠে, যা বাংলাদেশের জন্য এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা করে।

    জিয়াউর রহমানের উদ্যোগে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। তিনি যেমন ভারতের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে সচেষ্ট ছিলেন, তেমনি মুসলিম বিশ্ব, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। তাঁর বিচক্ষণ কূটনীতি ও আন্তরিকতায় দেশটি আন্তর্জাতিক মহলে সম্মানজনক স্থান লাভ করে। যেমন, সৌদি আরবের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করে বাংলাদেশের জনশক্তিকে আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন, যা দেশের অর্থনীতিতে একটি বিপ্লবের সূচনা করে।

    বিশ্বজুড়ে শান্তি ও সহযোগিতার জন্য জিয়াউর রহমানের প্রচেষ্টা সত্যিই প্রশংসনীয়। তিনি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের প্রথমবারের মতো নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের ভাবমর্যাদা বৃদ্ধি করেন। তাঁর দৃঢ় নেতৃত্বের ফলে সার্ক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতার নতুন অধ্যায় উন্মোচন করে।

    বাংলাদেশের শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ছিলেন এক অবিস্মরণীয় নেতা, যিনি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক সন্মান বৃদ্ধির জন্য অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে, বাংলাদেশ শুধু স্বাধীনতা অর্জন করেনি, বরং আন্তর্জাতিক পরিসরে নিজের অবস্থানও মজবুত করেছে।

    প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের একটি অসাধারণ উদ্যোগ ছিল সৌদি সরকারকে নিম গাছের চারা উপহার দেওয়া। এটি শুধুমাত্র একটি গাছের চারা নয়, বরং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের একটি সেতুবন্ধন। সৌদি বাদশাহ খালিদ বিন আব্দুল আজিজের সঙ্গে সাক্ষাতে, যখন তিনি বলেছিলেন, “তোমার দেশে যা নেই, আমার দেশে তা আছে,” তখন তিনি কার্যত দুদেশের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয়ের একটি নীতি প্রবর্তন করেছিলেন। এভাবেই তিনি কূটনৈতিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন।

    বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গর্বের অধ্যায় হলো শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের উদ্যোগে ইরাক-ইরান যুদ্ধের অবসানে ভূমিকা পালন করা। যখন সারা বিশ্ব অশান্তিতে ডুবছিল, তখন ইসলামি সম্মেলন সংস্থা একটি ভ্রাতৃত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। যুদ্ধের ভয়াবহতা উপলব্ধি করে তারা একটি কমিটি গঠন করে, যেখানে বাংলাদেশও সম্মানের সঙ্গে সদস্য হিসেবে স্থান পায়।

    জিয়াউর রহমানের আরেকটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত ছিল বাংলাদেশি জনশক্তির আন্তর্জাতিক রপ্তানি। তিনি বুঝেছিলেন যে, বাংলাদেশের শ্রমিকদের দক্ষতা এবং পরিশ্রম আন্তর্জাতিক বাজারে কিভাবে মূল্যবান। তাই, তিনি দেশব্যাপী কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন, যাতে যুবকরা দক্ষ হয়ে উঠতে পারে। আজ, সৌদি আরব থেকে শুরু করে কাতার এবং বাহরাইন—সব জায়গায় বাংলাদেশের শ্রমিকরা নিজেদের প্রতিভা ও শ্রম দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছেন। এটি শুধুমাত্র অর্থনৈতিক উন্নতির সূচক নয়, বরং দেশের জন্য একটি গর্বের বিষয়।

    জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে, বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে একটি উল্লেখযোগ্য স্থান লাভ করেছে। তাঁর অনুসৃত নীতিমালার কারণে, বিদেশে বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাজ করার সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিতে বিপুল প্রভাব ফেলেছে। আজ, বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রমাণিত সক্ষমতা এবং পরিশ্রম আমাদের গর্বের বিষয়।

    বাংলাদেশের ইতিহাসে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কিউবা সফর একটি অবিস্মরণীয় অধ্যায়, যা আমাদের দেশের আন্তর্জাতিক পরিচিতির ভিত্তি স্থাপন করেছে। ১৯৭৯ সালে ফিদেল কাস্ত্রোর আমন্ত্রণে তাঁর কিউবা সফর ছিল এক সাহসী পদক্ষেপ, যেখানে তিনি বিশ্বশান্তি, মানবাধিকারের প্রতিষ্ঠা এবং জাতিগত স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে সবার জন্য সাম্যের ডাক দিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য কেবল একটি রাজনৈতিক ভাষণ ছিল না; তা ছিল একটি জাতির গর্বের প্রতীক। জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের কূটনীতি নতুন মাত্রায় প্রবাহিত হয়েছিল, যেখানে তিনি একটি নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতির প্রবর্তক হিসেবে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থানে দাঁড় করিয়েছিলেন। আজও যখন আমরা তাঁর এই সাহসী পদক্ষেপের কথা মনে করি, তখন আমাদের মনে জেগে ওঠে আশা ও প্রেরণা—একটি স্বাধীন, সমৃদ্ধ এবং সম্মানিত জাতির স্বপ্ন, যা আজও আমাদের পথ দেখায়। তাঁর আত্মত্যাগ ও দৃষ্টি আমাদের ইতিহাসের অমর স্মৃতি হয়ে থাকবে।

    জিয়াউর রহমান তাঁর সাহসী নেতৃত্বে শান্তি মিশনে এগিয়ে যান, শান্তির জন্য দুই দেশের সফর করে সম্পর্কের সেতু নির্মাণ করেন। তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপ ছিল বাংলাদেশের মর্যাদার প্রতীক; আন্তর্জাতিক পরিসরে আমাদের জাতীয় পরিচিতি উজ্জ্বল করেছে। তিনি তাঁর দৃঢ়চিত্ততা এবং মানবতার প্রতি মমত্ববোধ দিয়ে বিশ্বের সামনে বাংলাদেশকে একটি শান্তির রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করেন।

    এই ইতিহাসের পাতা উল্টালে আমরা দেখতে পাই, কীভাবে আমাদের দেশ একটি সংকটময় সময়ে মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়ে ছিল। জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের এই ভূমিকা আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। শান্তির পথযাত্রায় বাংলাদেশের এই অবদান চিরকাল আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। আজও আমরা তাঁর সাহস, দৃঢ়তা ও মানবতার প্রতি ভালবাসাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি; কারণ তাঁর নেতৃত্বে আমরা বুঝতে পেরেছি, সত্যিকার শান্তির জন্য জাতি এবং ধর্মের উর্ধ্বে উঠে মানবতার সাথে একাত্ম হওয়া প্রয়োজন।

    শহীদ জিয়াউর রহমানের অবদান আজও আমাদের কাছে একটি আলোর পথ নির্দেশ করে। তিনি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্নের বাস্তবায়নে আমাদের সকলের জন্য দায়িত্বশীল হতে হবে। তাঁর সেই অপরিসীম পরিশ্রম এবং ত্যাগের জন্য আমরা চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকব। জিয়াউর রহমান আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন, সহযোগিতা, সমবায় এবং কষ্টের মধ্য দিয়ে আমরা কীভাবে আন্তর্জাতিক সমাজে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারি।

    মাহবুব নাহিদ (লেখক, সাংবাদিক)

    বিআলো/তুরাগ

    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    August 2025
    M T W T F S S
     123
    45678910
    11121314151617
    18192021222324
    25262728293031