জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত রিকশা শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তা দিল শ্রম মন্ত্রণালয়
নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত রিকশা শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াল বাংলাদেশ সরকার। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন থেকে আহত ৯ জন রিকশা শ্রমিক এবং তাদের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে মোট ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে।
রবিবার (৩ আগস্ট) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান আহতদের হাতে চেক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সচিব বলেন, “রিকশাচালক ভাইয়েরা গণঅভ্যুত্থানে তাদের রক্ত দিয়ে দেশকে জাগিয়ে তুলেছিলেন। জাতি তাদের আত্মত্যাগ কখনো ভুলবে না।” তিনি রিকশাচালকদের সংগঠিত হয়ে ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের পরামর্শ দেন এবং শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের শিক্ষা ও চিকিৎসা সহায়তার সুযোগ গ্রহণের আহ্বান জানান। সচিব আরও জানান, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন এর নেতৃত্বে শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধন এবং শ্রমিকদের জন্য শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার কাজ এগিয়ে চলছে।
শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তরিকুল আলম বলেন, “১৬ বছর ধরে শ্রমজীবীরা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। জুলাই গণঅভ্যুত্থান সেই অবিচারের অবসান ঘটিয়েছে।”
গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মো. সোহেলের মা রহিমা বেগম আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, “২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থান ছিল আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা। আমার সন্তানের রক্ত বৃথা যায়নি—এ দেশ এখন সবার জন্য সমৃদ্ধ হবে।”
অনুষ্ঠানের সভাপতি ও শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মো. মুনির হোসেন খান বলেন, “এই বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ সবার জন্য কল্যাণকর হবে।”
অনুষ্ঠান শেষে শহীদ মো. সোহেলের জননী রহিমা বেগম ও পিতা মো. জাহাঙ্গীর আলম একটি বর্ণাঢ্য রিকশা শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন। শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত শোভাযাত্রায় প্রায় ৩০০ রিকশাচালক অংশ নেন। রাজধানীর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করা এ শোভাযাত্রায় গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক মুহূর্তসমূহ গ্রাফিতি ও প্ল্যাকার্ডে তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী মো. জহিরুল ইসলাম, শিল্পকলা একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী এবং ঢাকার বিভিন্ন এলাকার রিকশা শ্রমিকরা।
বিআলো/তুরাগ