জুলাই গণঅভ্যুত্থানে একদফা ডিজাইনের প্রবর্তক জবি শিক্ষার্থী মারুফ
আবুবকর সম্পদ, জবি প্রতিনিধিঃ গত বছরের কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন এক দফার দাবিতে রূপ নিতে চলেছিল, সেই সময় আন্দোলনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত “একদফা” ডিজাইনটি তৈরি করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক শিক্ষার্থী-মারুফ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
২০২৪ সালের ২ আগস্ট বিকেলে মারুফ তার ফেসবুক পেইজ Def. Not Flauors-এ “একদফা” শিরোনামের একটি গ্রাফিক ডিজাইন প্রকাশ করেন। মুহূর্তের মধ্যেই ডিজাইনটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা ৫ হাজারেরও বেশি শেয়ার ও লাখো ভিউ পায়। অনেকেই ছবিটি নিজের প্রোফাইল ছবিতে ব্যবহার করতে শুরু করেন। এতে আন্দোলনকারীদের মধ্যে নতুন করে সাহস ও সংগঠনের অনুপ্রেরণা তৈরি হয়।
জুলাই ২০২৪-এ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের দমন ও সহিংসতার ঘটনায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। আন্দোলনকারীদের দাবি, সরকারপক্ষ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালায়। এরপর যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কারের ঘোষণা দেন, তখন দেশের ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় সাধারণ জনগণ প্রকৃত পরিস্থিতি জানতে পারেনি।
মারুফ বলেন, আমরা যখন ইন্টারনেট ফিরে পেলাম, তখন দেখলাম কতজন ভাই-বোনের ওপর গুলি চলেছে, কিভাবে মানুষ খুন হয়েছে। নয় দফা তখন আর যথেষ্ট মনে হয়নি, মনে হয়েছে এই সমস্যার একটাই সমাধান-এক দফা, অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ।
এই চিন্তা থেকেই তিনি “একদফা” গ্রাফিক ডিজাইনটি তৈরি করে পোস্ট করেন। তার এই কাজ আন্দোলনকারীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে এবং সেটিই হয়ে ওঠে নতুন আন্দোলনের প্রতীক।
ডিজাইনটি ছড়িয়ে পড়ার পরদিন, অর্থাৎ ৩ আগস্ট ২০২৪, শনিবার বিকাল ৫টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম একদফা আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
মারুফ বলেন, এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল কোটা সংস্কার নিয়ে, কিন্তু দমনপীড়নের মাধ্যমে তা রূপ নেয় বৃহত্তর রাজনৈতিক আন্দোলনে। ডিজাইনটি আমি করেছি অন্তর থেকে-জনগণের রক্ত আর কান্না দেখে।
আন্দোলনের ইতিহাসে “একদফা” ডিজাইন এখন একটি স্মারকচিহ্নে রূপ নিয়েছে, যা সেই সময়কার রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং তরুণদের প্রতিবাদের শক্তিকে দৃশ্যমান করে তোলে।
বিআলো/এফএইচএস