ঝালকাঠিতে পেয়ারা রাজ্যে উচ্চ শব্দে বাদ্যযন্ত্র, অশ্লীল নৃত্য বন্ধ পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসনের তদারকি
মনিরুজ্জামান মনিরঃ ঝালকাঠি সদর উপজেলার ভীমরুলী ভাসমান পেয়ারা হাট ও পেয়ারা রাজ্যের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা পর্যটকদের উচ্চ শব্দে বাদ্যযন্ত্র ও অশ্লীল নৃত্য বন্ধে এবং পরিবেশ রক্ষায় তদারকি করেছে প্রশাসন। গতকাল সকালে ১১ ঘটিকায় ট্রলারযোগে উল্লেখযোগ্য স্থানে ভ্রমণ করে তদারকি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াসমিন এবং সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুজ্জামান। এসময় তাদের সাথে পুলিশের একটি দল ও সংবাদ কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। এরপূর্বে ২৮জুলাই ঝালকাঠি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত সতর্কিকরণ একটি নোটিশ জারী করা হয়।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, ঝালকাঠি সদর উপজেলাধীন কির্তিপাশা ইউনিয়নের ভীমরুলী পেয়ারা বাগান ও ভাসমান পেয়ারা বাজার ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য অত্যন্ত সমাদৃত একটি স্থান। এ স্থানটিতে প্রতিদিন অসংখ্য দেশি-বিদেশী পর্যটক আসেন। এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বাগানের স্বাভাবিক পরিবেশের ইকোলজিক্যাল ব্যালেন্স এবং স্থানীয় জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখতে নির্দেশনা দেয়া হলো- পেয়ারা বাগান পরিভ্রমণকালে পর্যটকগণ ডিজে সিস্টেম, লাউড স্পীকার এবং হাই ভলিউমের সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করে থাকে। যা স্থানীয় জনসাধারণের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা এবং বন্যপ্রাণির নিরাপদ আবাসনের জন্য হুমকি স্বরূপ।
তাই উচ্চ শব্দ ব্যবহার করে কোন ধরনের সাউন্ড সিস্টেম পর্যটন এলাকায় ভ্রমণের সময় ব্যবহার করা বা বাজানো যাবেনা। ইঞ্জিনচালিত বড় ট্রলার নিয়ে ভ্রমণ পিপাসুরা ভাসমান পেয়ারা বাজারে প্রবেশ করে যা পেয়ারা বাগানের স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত করে এবং বাগানের ইকোসিস্টেমে থাকা অন্যান্য জলজ এবং স্থলজ প্রাণিদের জন্য ক্ষতিকর পরিবেশ তৈরি করে। তাই ইঞ্জিনচালিত বড় ট্রলার বাগানে প্রবেশ করতে পারবেনা। পর্যটকগণকে ছোট ও মাঝারি সাইজের ইঞ্জিনবিহীন নৌযান ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হলো যাতে বাগানের স্বাভাবিক পরিবেশ এবং ইকোসিস্টেমের ভারসাম্য বজায় থাকে। পর্যটকদের নিয়ে আসা খাবারের উচ্ছিষ্টাংশ, পলিথিন, খাবারের প্যাকেট, প্লাস্টিকের বোতলসহ ক্ষতিকারক যে কোন বর্জ্য বা পদার্থ বাগানে বা পানিতে ফেলা যাবেনা। এটি পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ ।
পেয়ারা বাগানে অনুপ্রবেশকারী প্রত্যেক পর্যটককে সুশৃঙ্খল পরিবেশ ও শালীনতা বজায় রেখে এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সকলকে বিধি-বিধানের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রেখে বাগানে ভ্রমণের জন্য বলা হলো। উপরোল্লিখিত সকল নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সবাই মিলে ভাসমান পেয়ারা বাজার ও পেয়ারা বাগানের পরিবেশ সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও পর্যটকবান্ধব রাখি। এ বাগান আমাদের সম্পদ। এ সম্পদ রক্ষায় আসুন সবাই সচেতন হই। পর্যটন এলাকার সুন্দর ও নান্দনিক পরিবেশ বজায় রাখা, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য সকলের সচেতনতা ও সহযোগিতা জানিয়ে জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াসমিন। উল্লেখ্য, প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে দেশবিদেশের হাজারো পর্যটক ভাসমান পেয়ারা বাজার দেখতে আসেন। নদীঘেরা এই বাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ফলের সমারোহ পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে পরিচিত।