টাঙ্গাইলে গণসংযোগ শেষে ফেরার পথে বিএনপি নেতার মৃত্যু, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:গ ণসংযোগ শেষে ফেরার পথে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক মোহন (৮০) আর নেই। সোমবার সন্ধ্যায় দেলদুয়ার উপজেলার এলাসিন এলাকায় অসুস্থ হওয়ার পর তাঁকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিসিইউতে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ৭টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) এর চিকিৎসক ডা. মাহমুদুল হক জানান, হৃদ্রোগজনিত কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
জানা যায়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন প্রবীণ এই রাজনীতিক। সকাল থেকে গণসংযোগ শেষে বিকেলে দেউলী ইউনিয়নের একটি সভায় বক্তব্য দেন তিনি। মাগরিবের নামাজ শেষে গাড়িযোগে এলাসিনের আরেকটি কর্মসূচিতে যাওয়ার পথে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
ব্যক্তিজীবনে হামিদুল হক মোহন ভাষা আন্দোলনের কিংবদন্তি ভাষামতিন আবদুল মতিনের ভগ্নিপতি ছিলেন। তিনি স্ত্রী, দুই ছেলে, তিন মেয়ে এবং অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। রাতে তাঁর মরদেহ শহরের কলেজপাড়া এলাকার নিজ বাসভবনে নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বাদ যোহর টাঙ্গাইল শহরের ঐতিহাসিক বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বেবিস্ট্যান্ড কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফরহাদ ইকবাল।
এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, দলীয় সহকর্মী, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সর্বস্তরের জনতা।
হামিদুল হক মোহন ছিলেন ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক এবং মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি টানা ১৮ বছর টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন এবং কেন্দ্রীয় কমিটির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। একইসঙ্গে নাগরিক আন্দোলন, পরিবেশ রক্ষা এবং সামাজিক সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি।
গণসংযোগে তাঁর দেওয়া শেষ আবেগঘন বক্তব্যের কথা স্মরণ করে স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান, তিনি বলেছিলেন, চুল পেকে গেছে বলে যেন কেউ না ভাবে, আমি জনগণের জন্য আর কাজ করতে পারব না। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মানুষের অধিকার নিয়ে লড়াই করতে চাই।
রাজনৈতিক অঙ্গন, পরিবেশ আন্দোলন এবং জেলার নাগরিক সমাজ মনে করছে, হামিদুল হক মোহনের মৃত্যুতে টাঙ্গাইল এক সাহসী কণ্ঠস্বরকে হারালো।
বিআলো/এফএইচএস



