টাঙ্গাইল ভুঞাপুরে ঐতিহাসিক জাহাজ মারা দিবস পালিত
ভুঞাপুর উপজেলা প্রতিনিধিঃ: মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে টাঙ্গাইলে এক গুরুত্বপূর্ণ এবং গৌরবোজ্জ্বল ঘটনার দিন ১২ আগষ্ট। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে হানাদার বাহিনীর আধুনিক মরনাস্ত্র,গোলাবারুদ, জ্বালানি ও রসদ বোঝাই সাতটি ছোট বড় জাহাজ নারায়ণগঞ্জ ও সদরঘাট ইপিআর জেটি থেকে নদী পথে রওনা হয়ে তৎকালীন টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে উপজেলার সিরাজকান্দী নামক স্থানে ধলেশ্বরী নদীতে নোঙ্গর করে।
১৯৭১ সালের ১০:ই আগষ্ট তৎকালীন কাদেরিয়া বাহিনী সেই জাহাজে আক্রমন করেন এবং যুদ্ধ জাহাজে থাকা বিপুল পরিমাণ অস্ত্র গোলাবারুদ ধ্বংস করেন। সেদিন মুক্তিযোদ্ধারা গুরুত্বপূর্ণ ২টি জাহাজ আর এস ইউ ইঞ্জিনিয়ার ও এস টি রাজন সম্পুর্ন ভাবে ধ্বংস করে। তৎকালীন সমযে জাহাজ দুটিতে ২১ কটি টাকার অস্ত্র ও গোলাবারুদ ধবং করা হয়।
বর্তমানে সেই স্থানটি জাহাজ মারা ঘাট নামে পরিচিত। এটি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার নিকরাইল ইউনিয়নের যমুনা নদী তীরবর্তী সিরাজকান্দীতে অবস্থিত। ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নেওয়া স্থানটিতে জাহাজ মারা স্মৃতি স্তম্ভ স্থাপন করা হয়েছে।
প্রতিবছরের ন্যায় এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এখানে আয়োজন করা হয় মুক্তি যোদ্ধা সমাবেশ ও অন্যান্য অনুষ্ঠান মালার। এ-উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকালে ভূঞাপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে মুক্তি যোদ্ধা সমাবেশ, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এতে ভুঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো, আবু আব্দুল্লাহ খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল জেলা মুক্তি যোদ্ধা কমান্ডার এডভোকেট আব্দুল খালেক মন্ডল, বিশেষ অতিথি ভূঞাপুর উপজেলা মুক্তি যোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার নুরুল আমিন মিঞা নান্নু, মুক্তি যোদ্ধা চাঁদ মিয়া, মুক্তি যোদ্ধা গবেষণা পরিষদের সভাপতি ও সাবেক যুগ্মসচিব, শফিকুল ইসলাম মুকুল, বিভিন্ন সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা।
প্রধান অতিথি এডভোকেট আব্দুল খালেক মন্ডল বলেন, মুক্তি যুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থান মুক্তি যোদ্ধাদের অবদান কোনো ভাবেই খাটো করে দেখা যাবে না। ২৪ আর ৭১ এক জিনিস নয়। ৭১রে যুদ্ধ হয়েছে অস্ত্রের সাথে অস্ত্রের আর ২৪শে হয়েছে নিরস্ত্রের সাথে অস্ত্রের। এটাকে স্বাধীনতা বলা যাবে না স্বাধীনতা একবারই হয়েছে। আর ২৪শে হয়েছে স্বৈরাচার উৎখাত। অতএব কেউ একটার সাথে আর একটার তুলনা করবেন না। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের সম্মান বিন্দুমাত্র ক্ষুন্ন হতে দেবো না।
অনুষ্ঠান শেষে শিল্পীদের মনোঞ্জ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গণ সঙ্গীত পরিবেশ করেন।
বিআলো/তুরাগ