টার্বুলেন্সে কেবিন ক্রু আহত: জরুরি চিকিৎসা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন
মাঝ আকাশে প্রবল ঝাঁকুনি, আহত কেবিন ক্রু
ঢাকায় অবতরণের পর সরাসরি পঙ্গু হাসপাতালে, এক্স-রে রিপোর্টে অঙ্গহানির আশঙ্কা, জরুরি অ্যাম্বুলেন্স না দেওয়ার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক: আকাশপথে ভ্রমণ মানেই নিরাপদ যাত্রা—এমন ধারণা অনেকের। কিন্তু মাঝ আকাশে হঠাৎ টার্বুলেন্স বা ঝাঁকুনিই পাল্টে দিতে পারে সেই নিশ্চিন্ত ভ্রমণের চিত্র। ঠিক এমনই এক ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কেবিন ক্রু শাবামা আজমী মিথিলা। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে নিজেই পড়েছেন দুর্ঘটনার শিকার।
শুক্রবার আবুধাবি থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকাগামী বিজি-০১২৮ ফ্লাইট হঠাৎ তীব্র টার্বুলেন্সের কবলে পড়ে। এসময় নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছিলেন কেবিন ক্রু মিথিলা। হঠাৎ প্রবল ঝাঁকুনিতে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গিয়ে তাঁর বাম হাতের হাড় ভেঙে যায়। সঙ্গে সঙ্গেই সহকর্মীরা তাঁকে প্রাথমিক সহায়তা দেন।
ঢাকায় অবতরণের পর আহত মিথিলাকে সরাসরি রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হয়। এক্স-রে রিপোর্টে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, তাঁর বাহুর হাড় ভেঙে গেছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এতে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়েছে এবং অঙ্গহানির আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে তিনি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।
এদিকে দুর্ঘটনার পর বিমানবন্দর মেডিকেল সেন্টারের ভূমিকা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। অভিযোগ রয়েছে, ঘটনার খবর পাওয়ার পরও কোনো চিকিৎসক ঘটনাস্থলে আসেননি, এমনকি আহত কেবিন ক্রুর জন্য জরুরি অ্যাম্বুলেন্সও সরবরাহ করা হয়নি। সহকর্মীদের সহায়তায় তাঁকে হাসপাতালে নিতে হয়, যা কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতির ঘাটতি প্রকাশ করে।
এমন ঘটনা আবারও সামনে আনল কেবিন ক্রুদের কর্মঝুঁকির বাস্তবতা। যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গিয়ে তারাই মাঝ আকাশে টার্বুলেন্স, অগ্নিকাণ্ড বা অন্য দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার ঝুঁকি নেন। অথচ জরুরি চিকিৎসা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বারবার অবহেলার অভিযোগ উঠছে।
যাত্রীসেবায় নিয়োজিত শাবামা আজমী মিথিলার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন সহকর্মীরা। পাশাপাশি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, টার্বুলেন্সের সময় ক্রুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, বিমানে উন্নত নিরাপত্তা সরঞ্জাম রাখা এবং অবতরণের পর দ্রুত জরুরি চিকিৎসা সেবা দেওয়া—এই বিষয়গুলো আর দেরি না করে কার্যকর করতে হবে।
বিআলো/তুরাগ