তারেক-জুবাইদার বিচার ছিল পক্ষপাতদুষ্ট: হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়
নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া নিরপেক্ষ ছিল না বলে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (১৪ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ৫২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
রায়ে বলা হয়, বিচারিক আদালতে মাত্র দুই মাস চার দিনে ৪২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ এবং মাত্র আট দিনের মধ্যে রায় ঘোষণা বিচারিক প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এতে স্বাভাবিকভাবে আদালতের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ সৃষ্টি হয়।
হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করে, জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৬(১) ধারায় মামলার আগে কোনো নোটিশ প্রদান করা হয়নি। ফলে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে সাজা দেওয়া আইনসম্মত হয়নি এবং তা বাতিলযোগ্য।
রায়ে আরও বলা হয়, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ ছিল। ফৌজদারি কার্যবিধির ২২১ ধারার বিধান অনুযায়ী অভিযোগ গঠন না হওয়ায় সেখানেও আইনি ব্যত্যয় ঘটেছে। ত্রুটিপূর্ণ এই অভিযোগের ভিত্তিতে দণ্ড বহাল রাখা যায় না।
২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় তারেক রহমান, জুবাইদা রহমান ও তার মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের অভিযোগে মামলা করে দুদক।
দীর্ঘ বিচার শেষে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান তারেক রহমানকে দুই ধারায় মোট ৯ বছর এবং জুবাইদা রহমানকে ৩ বছর কারাদণ্ড দেন।
তারেক রহমানকে ৩ কোটি টাকা এবং জুবাইদা রহমানকে ৩৫ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়।
দীর্ঘ ১৭ বছর লন্ডনে অবস্থানের পর গত ৬ মে দেশে ফেরেন জুবাইদা রহমান। পরদিন আপিল দায়ের করেন তিনি। ১৩ মে হাইকোর্ট আপিল দায়েরের ৫৮৭ দিনের বিলম্ব ক্ষমা করে নেন এবং ১৪ মে জামিন মঞ্জুর করেন।
গত ২৮ মে হাইকোর্টের একক বেঞ্চে শুনানি শেষে তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানকে খালাস দেওয়া হয়।
বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, এই রায় আমাদের দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করেছে—তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পক্ষপাতদুষ্ট বিচার হয়েছিল। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে সেটাই পরিষ্কারভাবে উঠে এসেছে।
বিআলো/এফএইচএস