তীব্র তাপপ্রবাহে দক্ষিণ ইউরোপজুড়ে দাবানল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ ইউরোপজুড়ে চলছে চলতি মৌসুমের তৃতীয় দফার তীব্র তাপপ্রবাহ। এর মধ্যেই গ্রিস ও পশ্চিম বলকানজুড়ে ভয়াবহ দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রিস ও আলবেনিয়ায় বহু গ্রাম ও বসতি থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দাবানল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে শত শত দমকলকর্মী ও উদ্ধারকারী বাহিনী।
গ্রিসের রাজধানী অ্যাথেন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত ড্রোসোপিগি গ্রামে দাবানলের ফলে আকাশে ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী ছড়িয়ে পড়ে।
সেখানকার দাহ্য পদার্থ সংরক্ষিত একাধিক কারখানা থেকে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪৫ জন দমকলকর্মী, ৪৪টি গাড়ি, ৭টি হেলিকপ্টার, এবং ১০টি বিমান কাজ করছে।
ক্রিওনেরি গ্রামে আগুনে দুটি বাড়ি পুড়ে গেছে। ধোঁয়া ও দগ্ধজনিত কারণে ৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এ এলাকার মানুষদের অ্যাথেন্সের দিকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
গ্রিসের দমকল বিভাগের মুখপাত্র ভাসিলিওস ভাথরাকোগিয়ান্নিস জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২টি বনাঞ্চল ও কৃষিজমিতে আগুন লাগে, যার মধ্যে ৪৪টি স্থানে তাৎক্ষণিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
এভিয়া দ্বীপে নতুন করে দাবানলের খবর পাওয়া গেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ১২৮ জন দমকলকর্মী, ২৯টি গাড়ি, ৬টি বিমান এবং ৭টি হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে।
তবে প্রবল বাতাসের কারণে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ত্রিয়াদা এলাকায় লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, আগুনে দুটি ফায়ার ট্রাক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং পাঁচজন দমকলকর্মী আহত হয়েছেন।
কিথিরা দ্বীপে দাবানলের কারণে একাধিক গ্রাম খালি করে দেওয়া হয়েছে। কোস্ট গার্ডের তথ্যমতে, লিমনিওনাস সৈকত থেকে ১৩৮ জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আলবেনিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় ডেলভিনা শহরের কাছে শুক্রবার একটি ভয়াবহ দাবানলে তিনজন আহত হন এবং প্রায় দুই হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়। শনিবার আরও ২৬টি নতুন স্থানে দাবানলের খবর পাওয়া গেছে।
আবহাওয়া অফিস শনিবার রেকর্ড উচ্চ তাপমাত্রা ও দমকা হাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিল, যা আগুন ছড়িয়ে পড়ার পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে। মেসিনিয়া, সেল্লাস এবং ক্রিওনেরি অঞ্চলও খালি করে ফেলা হয়েছে।
এই দাবানল দক্ষিণ ইউরোপের পরিবেশ, কৃষি এবং জনজীবনে চরম প্রভাব ফেলছে। বনের জীববৈচিত্র্য, সম্পদ ও আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে দাবানলের ভয়াবহতা আরও বাড়বে।
বিআলো/এফএইচএস