থানায় অভিযোগ দিতে গিয়ে নিজেই জেল হাজতে সাবেক এমপি
মনিরুজ্জামান মনির, ঝালকাঠি: হামলাকারীদের বিরুদ্ধে রাজাপুর থানায় অভিযোগ দিতে গিয়ে নিজেই গ্রেপ্তার হয়ে জেল হাজতে গেলেন বিএনপি ত্যাগ করে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে ঝালকাঠি-১ আসন থেকে নির্বাচিত হওয়া সাবেক সাংসদ ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর।
২১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টায় ঝালকাঠির রাজাপুর থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে তাকে আদালতে জেলহাজতে সোপর্দ করেন। ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফরোজা বিনতে শহীদ সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান ওমরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সূত্রে জানা গেছে, সকাল পৌনে ৯টার দিকে শাহজাহান ওমর রাজাপুরে প্রবেশ করতে চাইলে উপজেলারর সীমান্ত বাড়ইবাড়ি এলাকা অতিক্রম করে উত্তর পিংড়ি এলাকায় পৌছলে তার গাড়িতে অতর্কিত হামলা করে দুর্বৃত্তরা। এতে তার গাড়ি ক্ষতবিক্ষত হয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। এতে শাহজাহান ওমরও আহত হন। আহতাবস্থায় গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রান্তিক পথ ঘুরে সাংগর গ্রামের বাড়িতে অবস্থান নেন। কিছুক্ষণ পরে সাড়ে ১০টার দিকে রাজাপুর থানায় গাড়ি ভাঙচুরের মামলা দিতে গেলে কাঠালিয়া থানায় দায়ের হওয়া মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর জানান, আমি সাংগর গ্রামের বাড়িতে বোনের কবরস্থানে কাজ করানোর জন্য আসার পথে হামলার শিকার হয়েছি। বাড়ির কাজ শেষ করে লেবুখালী ক্যান্টনমেন্টে স্বশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। তবে হামলার বিষয়ে রাজাপুর থানায় মামলা দিতে আসলে পুলিশ বলছে আমাকে কাঠালিয়া থানার একটি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু আমার নামে মামলার বিষয়ে আমি আগে কিছুই জানতাম না। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহিতুল ইসলাম জানান, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরকে গ্রেপ্তার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নামে কাঠালিয়ায় একটি নিয়মিত মামলা রয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
প্রসঙ্গত পুলিশ সূত্র জানায়, গত ২০২৩ সালের ৪ ডিসেম্বর কাঁঠালিয়া থানা বিএনপি অফিসে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কাঁঠালিয়া উপজেলার বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন মিরবহর বাদী হয়ে কাঁঠালিয়া থানায় শাহজাহান ওমরসহ ১০ জনকে আসামি করে দঃবিঃ ১৪৭/১৪৮/ ৪৪৯/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৪৩৬/৪২৭/৫০৬(২) পেনাল কোড ধারায় মামলা (নং ৯) দায়ের করেন।
আদালত থেকে তাকে কারাগারে নেওয়ার পথে কতিপয় আইনজীবী ও বিএনপি, অংগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে এবং গায়ে পচা ডিম নিক্ষেপ করে তাকে লাঞ্ছিত করেন। এরআগে বুধবার সন্ধ্যায় রাজাপুর উপজেলা বিএনপি তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিল থেকে একটি গ্রুপ বিচ্ছিন্ন হয়ে উপজেলা সদরের বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুর করে।
বিআলো/তুরাগ