দিনের শুরুতেই যে আমল রাখবে বরকত ও সুরক্ষা
বিআলো ডেস্ক: বিআলো ডেস্ক: দিনের শুরু মানুষের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, দিনের শুরু যদি ইবাদত ও দোয়ায় হয়, তাহলে সারাদিন আল্লাহর রহমত ও নিরাপত্তায় কাটে।
ইসলামে এমন কিছু আমলের কথা বলা হয়েছে, যেগুলো সকালবেলায় করলে মানুষ সারাদিন নিরাপদ ও বরকতময় সময় অতিবাহিত করতে পারে। নিচে কোরআন ও হাদিসের আলোকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আমল তুলে ধরা হলো—
আয়াতুল কুরসি—
পবিত্র কোরআনের সুরা বাকারার ২৫৫ নম্বর আয়াতকে আয়াতুল কুরসি বলা হয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি সকালে আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, সে সন্ধ্যা পর্যন্ত আল্লাহর আশ্রয়ে নিরাপদ থাকবে। আর যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় পড়বে, সে সকাল পর্যন্ত জিন-শয়তানের হাত থেকে আল্লাহর হেফাজতে থাকবে।
সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস—
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, নবীজি (সা.) বলেছেন—যে ব্যক্তি সকাল ও বিকেলে তিনবার করে সুরা ইখলাস, সুরা ফালাক ও সুরা নাস পড়বে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য সবকিছুতে যথেষ্ট হবেন। (তিরমিজি: ৩/১৮২)
ইস্তিগফার—
প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ বার বলা উচিত:
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ: আস্তাগফিরুল্লাহ ওয়া আতুবু ইলাইহি।
অর্থ: আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইছি এবং তাঁর কাছেই তওবা করছি। (বুখারি: ৬৩০৭; মুসলিম: ২৭০২)
ফজরের পর দোয়া—
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْماً نافِعاً، وَرِزْقاً طَيِّباً، وَعَمَلاً مُتَقَبَّلاً
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা ইন্নি আসআলুকা ‘ইলমান নাফি‘আন, ওয়া রিযকান ত্বায়্যিবান, ওয়া ‘আমালান মুতাক্বাব্বালান।
হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট উপকারী জ্ঞান, পবিত্র রিযিক ও কবুলযোগ্য আমল চাই। (ইবন মাজাহ: ৯২৫)
যিকির—
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ يُحْيِي وَيُمِيتُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِير
উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকালাহু, লাহুল মূলকু ওয়া লাহুল হামদু, ইউহয়ি ওয়া ইউমীতু, ওয়া হুয়া ‘আলা কুল্লি শাইইন ক্বাদীর।
অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তাঁর কোনো শরিক নেই। রাজত্ব ও প্রশংসা তাঁরই। তিনিই জীবন দান করেন ও মৃত্যু দেন। আর তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। এটি সকাল ও বিকেলে ১০ বার করে পড়তে হবে। (তিরমিজি: ৩৪৭৪)
ভোরের বিশেষ দোয়া—
اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَدَنِي، اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي سَمْعِي، اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي بَصَرِي، لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ …
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আ-ফিনী ফি বাদানি, আল্লা-হুম্মা আ-ফিনী ফি সামই, আল্লা-হুম্মা আ-ফিনী ফি বাসারি, লা ইলাহা ইল্লা আনতা। আল্লা-হুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল কুফরি ওয়াল ফাকরি, ওয়া আউযুবিকা মিন আযাবিল কবর, লা ইলাহা ইল্লা আনতা।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমার শরীর, শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তিকে নিরাপদ রাখুন। কুফরি, দারিদ্র্য ও কবরের আজাব থেকে আমাকে আশ্রয় দিন। আপনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। এই দোয়াটি সকালে ও সন্ধ্যায় ৩ বার করে পড়তে হবে। (আবু দাউদ: ৫০৯২)
আল্লাহর ওপর ভরসার দোয়া—
حَسْبِيَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيهِ تَوَكَّلتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ
উচ্চারণ: হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়া, ‘আলাইহি তাওয়াক্কালতু, ওয়া হুয়া রব্বুল আরশিল আজিম।
অর্থ: আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তাঁর বাইরে কোনো উপাস্য নেই। আমি তাঁর ওপরই ভরসা করি, আর তিনি মহান আরশের রব্ব। সকাল-বিকেল সাতবার করে এ দোয়া পড়তে হবে। (আবু দাউদ)
হাদিসে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি এসব আমল ও দোয়া নিয়মিত সকাল-বিকেল করবে, আল্লাহ তার জন্য দুনিয়া ও আখেরাতের যাবতীয় চিন্তা ও বিপদ থেকে মুক্তি দেবেন। সারাদিন আল্লাহর রহমত, বরকত ও নিরাপত্তায় থাকবে।
বিআলো/শিলি