দেশে ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্তদের অর্ধেকই মারা যায়: আলোচনায় বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগ
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্তদের অর্ধেকই মৃত্যুবরণ করেন বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, রোগীরা দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসা এবং দেরিতে শনাক্ত হওয়ার কারণে মৃত্যুহার আশঙ্কাজনকভাবে বেশি।
শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন মিলনায়তনে ব্রেস্ট ক্যানসার সচেতনতা উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
‘ব্রেস্ট ক্যানসার সচেতনতা মাস’ উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে জাতীয় প্রেস ক্লাব ও সংগঠন ‘আমরা নারী, আমরা পারি’। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও কালের কণ্ঠ-এর সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ।
আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. লায়লা শিরিন, জাতীয় প্রেস ক্লাবের ট্রেজারার বখতিয়ার রানা, আমরা নারীর প্রতিষ্ঠাতা ও চিফ কো-অর্ডিনেটর এম এম জাহিদুর রহমান বিপ্লব, এবং এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য রোকসানা আক্তার রুপি প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ব্রেস্ট ক্যানসারবিষয়ক দুটি প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ডা. লায়লা শিরিন ও সার্জিক্যাল অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. খাদেমুল বাসার।
ডা. খাদেমুল বাসার বলেন, “অনেক রোগী দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসেন। ব্রেস্টে ব্যথাসহ কোনো চাকা থাকলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই, তবে যে চাকায় ব্যথা থাকে না সেটিই বেশি বিপজ্জনক।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্বে ক্যানসারে আক্রান্তদের চার ভাগের এক ভাগ মারা যায়, অথচ বাংলাদেশে আক্রান্তদের অর্ধেকই মারা যান। এর মূল কারণ দেরিতে চিকিৎসা শুরু করা ও দেরিতে শনাক্ত হওয়া।”
অধ্যাপক ডা. লায়লা শিরিন বলেন, “অন্যান্য দেশে ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি হলেও মৃত্যু হার খুব কম। সেখানে কেউ ভাবে না যে ব্রেস্ট ক্যানসারে মারা যাবে — কারণ তারা সচেতন এবং নিয়মিত স্ক্রিনিং করেন।”
সভাপতির বক্তব্যে কবি হাসান হাফিজ বলেন, “আমাদের সমাজে এখনও কুসংস্কার ও ট্যাবুর কারণে অনেক নারী সময়মতো চিকিৎসা নেন না। আমরা সবাই সচেতন হলে অনেক জীবন বাঁচানো সম্ভব।”
তিনি জানান, প্রেস ক্লাব ভবিষ্যতে ক্যানসার সচেতনতা, বিশেষ করে নারীদের ব্রেস্ট ক্যানসার ও পুরুষদের প্রোস্টেট ক্যানসার বিষয়েও নিয়মিত অনুষ্ঠান আয়োজন করবে।
বক্তারা আরও বলেন, নিয়মিত নিজে নিজে ব্রেস্ট পরীক্ষা করা, বছরে অন্তত একবার চিকিৎসকের মাধ্যমে স্ক্রিনিং করানো এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করাই ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধের প্রধান উপায়।
বিআলো/এফএইচএস



