নদী বাঁচানোর অঙ্গীকার: নদীর কান্না শিরোনামে শিশুদের চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের নদীগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে নদী সংরক্ষণের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ‘বিশ্বনদী দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় কচি-কাঁচারমেলায় এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), রিভার এন্ড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট, বাংলাদেশ (আরএসডিবি) এবং ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশ এর যৌথ উদ্যোগে ‘নদীর কান্না’ শিরোনামে এই শিশুদের চিত্রাঙ্কণ প্রতিযোগিতা এবং নদীর সুরক্ষা বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নদীদখল ও দূষণ মুক্তির বার্তা সমাজের সকল স্তরের মানুষ ও নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিতে এই আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা। রিভার এন্ড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ’র এর সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল গাজীর সঞ্চালনায় এবং রিভার এন্ড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশ’র উপদেষ্টা বীরমুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের ইনস্টিটিউট অফ ওয়াটার এন্ড ফ্লাডম্যানেজমেন্টের অধ্যাপক ড. সারানওরিন।
অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডরপ-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী এ এইচ এম নোমান; এডুক্যান ইন্টারনেশনাল লিঃ’র পরিচালক এবং ইউসিএসআইইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ’র একাডেমিক এডভাইজার মেজর মো. সারওয়ার মোরশেদ (অবঃ); স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মাহমুদা পারভিন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাবেক সভাপতি ফজলে রেজা সুমন, বৃহত্তর নোয়াখালী সমিতি, খুলনা’র সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মোল্লা এবং গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী কাজী আমিরাহ্ ফাতেমা আন্জুম।
সভাপতির বক্তব্যে বীরমুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহমদ পানির দূষণের কারণে মানববসতির হুমকির দিক তুলে ধরেন এবং আমাদেরকে হাইড্রলিক দেশ হিসেবে ঘোষণা দেওয়া জরুরি বলে মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন রিভার বাংলা’র সম্পাদক এবং ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-এর সদস্য ফয়সাল আহমেদ। তিনি বলেন, নদীর একটি মন আছে। তাকে দুঃখ দিলে সে কান্না করে। এখন আমরা যে দূষণ করি, ময়লা ফেলি তাতে নদীর কষ্ট হয়। বাচ্চারা যেন নদীর সুন্দর চিত্র দেখতে পায় সেই শিক্ষা পরিবার থেকেই দিতে হবে যে ময়লা যেখানে সেখানে ফেলা যাবেনা।
ফজলে রেজা সুমন বলেন, নদীর কান্না আটকানোর দায়িত্ব নিতে হবে নতুন প্রজন্মকে। ঢাকার নদী বা খালের এই ভয়াবহ অবস্থার জন্য পরিকল্পনাকারীরা দায়ী। আমাদের এখন নাগরিক সমাজ থেকে আওয়াজ তুলতে হবে। নীল নদ বাটেমস নদীও কিন্তু দূষিত ছিল। জনগণের আন্দোলনের ফলে আজকে এই দুইটা নদী সুন্দর হয়েছে। তাহলে আমরা কেন নয়।
এ এইচ এম নোমান তার বক্তব্যে আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, আমরা এক সময় নদীর পানি খেয়েছি। আজকে বোতলের পানি ছাড়া বা ফিল্টার ছাড়া খেতে পারিনা।
ড. মাহমুদা পারভিন প্রশ্ন রাখেন, নদী পৃথিবীর সবখানে আছে। তাহলে নদীর জন্য আলাদা দিবস কেন লাগবে? তার মানে নদীকে আমরা যেমন দেখতে চাইতে মন নাই। আমাদের নদীকে নিয়ে কাজ করতে হবে।
ড. সারানওরিন বলেন, আমরা দেশকে ভালোবাসি কিন্তু ভালোবাসার জন্য কি করতে হবে সেটা আমরা জানিনা। আমাদের জানতে হবে এবং আমাদের পরিবেশ ঠিক করতে হবে।
আলোচনা সভার পর তিনটি ভিন্ন বিভাগে ৫ জন করে এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ক্যাটাগরিতে ৩ জন মোট ১৮ বিজয়ী শিশুদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
বিআলো/এফএইচএস