নবীনগরে সরকারি সফরে আসছেন উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ
এস এম অলিউল্লাহ, (নবীনগর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া: অন্তর্বর্তী সরকারের সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ প্রথমবারের মতো সরকারি সফরে নিজ জন্মভূমি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে আসছেন। আগামী বুধবার (২৭ আগস্ট) তিনি উপজেলার শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের নাসিরাবাদ গ্রামে পৌঁছাবেন।
২৪ আগস্ট উপদেষ্টার একান্ত সচিব তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সড়কপথে ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে বেলা ১১টায় তিনি নিজ বাড়িতে উপস্থিত হবেন। দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত নাসিরাবাদ ও মানিকনগরে নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করবেন। বিকাল ৩টায় স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে চারটায় ঢাকার পথে রওনা দেবেন।
তার আগমনে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা আশা করছেন, দীর্ঘদিনের নদীভাঙন সমস্যার সমাধানে এবার কার্যকর উদ্যোগ আসবে। উপজেলা প্রশাসনও তাকে বরণে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলে জানিয়েছেন ইউএনও রাজীব চৌধুরী।
শারমিন এস মুরশিদ দেশের ইতিহাস, রাজনীতি ও সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত পরিবারের সদস্য। তার দাদা আলী আহাম্মদ খান আওয়ামী মুসলিম লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন এবং ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে নবীনগর-বাঞ্ছারামপুর আসন থেকে এমএলএ নির্বাচিত হন। তার মা নূরজাহান মুরশিদ বঙ্গবন্ধু সরকারের সমাজকল্যাণমন্ত্রী ছিলেন এবং ১৯৭৪ সালে আদর্শিক কারণে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। বাবা ড. সারোয়ার মোর্শেদ খান ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে শারমিন এস মুরশিদ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থার সদস্য ছিলেন এবং গান ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মুক্তিকামী মানুষকে উজ্জীবিত করেন। এ সংগঠনকে ঘিরেই নির্মিত হয় ঐতিহাসিক তথ্যচিত্র মুক্তির গান।
তিনি উন্নয়ন ও মানবাধিকার আন্দোলনে দীর্ঘদিন সক্রিয় আছেন। বর্তমানে ব্রতী সংগঠনের প্রধান নির্বাহী হিসেবে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিশেষ করে আদিবাসীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করছেন। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের কমিশনার হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স ফর ইলেকশন মনিটরিংয়ের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। নির্বাচনী অনিয়ম, গণতন্ত্র ও সুশাসন নিয়ে সরব থেকেছেন তিনি। ২০১২ সালে গ্রামীণ ব্যাংক ইস্যুতে নারী নেত্রীদের সঙ্গে যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করে ব্যাংককে স্বাধীনভাবে টিকিয়ে রাখার দাবি জানান। সম্প্রতি তিনি ২০২৪ সালের নির্বাচনকে “এক পাশাপোষিত নির্বাচন” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও তার কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য। ২০২৫ সালের মার্চে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত CSW69 সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং নারী ও শিশুর অধিকার ও উন্নয়নে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বিআলো/এফএইচএস