নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীকে পেশাদার থাকার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
বিআলো ডেস্ক: আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রার গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক উল্লেখ করে সশস্ত্র বাহিনীকে সর্বোচ্চ দক্ষতা, সতর্কতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৫-এর উপলক্ষে শুক্রবার রাজধানীর সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই আহ্বান জানান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “একটি নির্বিঘ্ন, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনই এখন জাতীয় অগ্রাধিকার। এ লক্ষ্য অর্জনে সশস্ত্র বাহিনী সর্বদা তাদের পেশাগত সক্ষমতা ও দেশপ্রেমের পরিচয় দিয়ে আসছে; আসন্ন নির্বাচনেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”
অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ, যুদ্ধাহতসহ সব বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। একই সঙ্গে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রাণ হারানো, আহত ও অংশগ্রহণকারী নাগরিকদেরও স্মরণ করেন।
তিনি বলেন, “তাদের আত্মত্যাগই আমাদের সামনে দেশ পুনর্গঠনের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।”
তিনি আরও স্মরণ করিয়ে দেন, সশস্ত্র বাহিনীর জন্ম ১৯৭১ সালের রণাঙ্গনে; বিশেষ করে ২১ নভেম্বর সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সম্মিলিত আক্রমণ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এক গৌরবময় মাইলফলক। ১১টি সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, গেরিলা অভিযান এবং ২১ নভেম্বরের যৌথ আক্রমণ শেষ পর্যন্ত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় নিশ্চিত করে- যা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর অবদান তুলে ধরে তিনি বলেন, “শান্তিপ্রিয় জাতি হিসেবে আমরা সকল বন্ধুরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্মানজনক সহাবস্থানে বিশ্বাসী। তবে যে কোনো বহিঃশত্রুর আগ্রাসন প্রতিহত করতে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।” এ প্রেক্ষাপটে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর আধুনিকায়ন, উন্নত প্রশিক্ষণ এবং যুগোপযোগী প্রযুক্তি সংযোজনের ধারাবাহিক প্রচেষ্টার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের ভূমিকা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা জানান, গত ৩৭ বছরে ৪৩টি দেশে ৬৩টি মিশন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ। বর্তমানে ১০টি মিশনে দেশের সামরিক সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন, যেখানে নারীর অংশগ্রহণও বাংলাদেশের জন্য একটি বিশেষ মর্যাদা এনে দিয়েছে।
তিনি বলেন, “বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার বৈশ্বিক প্রয়াসে বাংলাদেশ এখন একটি নির্ভরযোগ্য নাম। এই অর্জনের পেছনে সশস্ত্র বাহিনীর নিবেদন ও পেশাদারিত্বই প্রধান শক্তি।”
বিআলো/শিলি



