পাকিস্তানের পাঞ্জাবে ভারী বৃষ্টি ও বন্যায় ৩৩ জনের প্রাণহানি
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ভারী বর্ষণের মধ্যে ভারত বাঁধের পানি ছেড়ে দেয়ায় ৪০ বছরের মধ্যে নজিরবিহীন বন্যার কবলে পাকিস্তান। ভয়াবহ বন্যায় পূর্ব পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশসহ দেশটির একাধিক অঞ্চল। মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া দুই হাজার ৩০০ বেশি গ্রামের ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে বন্যা-ভূমিধ্বসে শনিবার (৩০ আগস্ট) ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে একই পরিবারের সাত সদস্যসহ কমপক্ষে ১১ জনের প্রাণ গেছে।
রোববার (৩১ আগস্ট) এক দুর্যোগ সংস্থার কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছে।
এক প্রতিবেদনে আরব নিউজ বলছে, পাকিস্তানের সবচেয়ে সমৃদ্ধ এবং কৃষিপ্রধান প্রদেশ পাঞ্জাবে চলতি সপ্তাহে ভারি বৃষ্টি এবং উজানের ভারত থেকে ছেড়ে দেওয়া অতিরিক্ত পানির ফলে সৃষ্ট বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনডিএমএ) অনুসারে ২৬ জুন থেকে বৃষ্টিপাত দেশব্যাপী ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। এতে কমপক্ষে ৮৩১ জন নিহত এবং ১,১২১ জন আহত হয়েছে। পাঞ্জাবে এই সময়সীমায় ১৯১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, যা উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া (কেপি) এর পরে দ্বিতীয়, যেখানে ৪৮০ জন নিহত হয়েছে।
এছাড়া সিন্ধুতে ৫৮ জন, গিলগিট-বালতিস্তানে ৪১ জন, আজাদ কাশ্মীরে ২৯ জন, বেলুচিস্তানে ২৪ জন এবং ইসলামাবাদে আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
পাঞ্জাবের বন্যার এই সংকট এমন এক সময় এলো যখন আবহাওয়া অফিস যাকে নবম বর্ষার বৃষ্টিপাত হিসেবে বর্ণনা করেছে, যা ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চেনাব, রবি এবং শতদ্রু নদীর পানির স্তর বিপজ্জনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রদেশের সকল জেলায় নাগরিকদের খাদ্য, চিকিৎসা সহায়তা এবং সুরক্ষা প্রদানে কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, পাকিস্তানের ইতিহাসে এটিই প্রথমবারের মতো তিনটি প্রধান নদী একইসঙ্গে ‘সুপার ফ্লাড’ অবস্থায় রয়েছে।
প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (পিডিএমএ) মহাপরিচালক পাঞ্জাব ইরফান আলী কাঠিয়া এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘সর্বশেষ মৃত্যুর খবর অনুসারে, বন্যাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা (এই সপ্তাহে) ৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বন্যা এলাকা থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে পাঞ্জাবের কমপক্ষে ২,২০০ গ্রাম এবং দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লেখেন, ‘উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রদেশের প্রতিটি ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘ফলাফল হলো মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে ৭ লাখ ৪৬ হাজার ৬৬৪ জন মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং প্রায় ৫,০০,০০০ পশু/গবাদি পশুকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’
বিআলো/শিলি